পুরসভার সামনে বিক্ষোভ তৃণমূলের। — নিজস্ব চিত্র
শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে পুরসভার ব্যর্থতাকে তুলে ধরে আন্দোলন জোরদার করছে তৃণমূল। আগের দিন মেয়রের ওয়ার্ডে মিছিলের পর বৃহস্পতিবার বামেদের দখলে থাকা চার নম্বর বরো অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান যুব তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা। চেয়ারম্যানকে না পেয়ে বরো আধিকারিককে স্মারকলিপি দেন।
তৃণমূলের অভিযোগ, প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গি হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় জঞ্জালের স্তূপ। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ অভিযোগ তুলে মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
এ দিন, ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নিতে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি পাঠিয়েছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।
অশোকবাবু জানান, পুরসভার স্থায়ী স্বাস্থ্য আধিকারিক নেই। জরুরি ভিত্তিতে ওই পদে আধিকারিক দেওয়া হোক। একজন পতঙ্গবিদও চাওয়া হয়েছে। রোগ নির্ণয়ে পুরসভাকে ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার যন্ত্র দেওয়ার কথাও জানান তিনি। এই পরিস্থিতে পুরসভাকে পরামর্শ দিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকাতে পুরমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন। সেখানে স্বাস্থ্য এবং পুর দফতরের পদস্থ আধিকারিকদের থাকার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
যদিও মেয়র এ দিন বলেন, ‘‘জেলা স্বাস্থ্য দফতর যে তথ্য দিয়েছে তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’ তিনি জানান, এ দিন স্বাস্থ্য দফতর রিপোর্ট পাঠিয়ে জানিয়েছে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ২০৪। তবে নতুন করে যাদের নাম রয়েছে তারা ২৬, ২৭ নভেম্বর অসুস্থ ছিলেন। এখন সুস্থ হয়ে বাড়ি গিয়েছেন। হাসপাতালেও ডেঙ্গি আক্রান্ত কেউ নেই বলে জানানো হয়েছে বলে দাবি করেন মেয়র। তা হলে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকতে, জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য আধিকারিক, ম্যাক এলাইজা মেশিন দিতে আর্জি জানাচ্ছেন কেন? মেয়রে জানান, এখন ডেঙ্গি হচ্ছে। এনসেফ্যালাইটিস, চিকনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া মতো রোগ শীত এবং শীতের পর ছড়াতে থাকে। সে জন্য প্রস্তুত থাকা দরকার।
দার্জিলিং জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি বিকাশ সরকারের অভিযোগ, ‘‘অশোকবাবু মেয়র হওয়ার পর থেকেই সুষ্ঠু কোনও ক্ষেত্রেই পরিষেবা দিতে পারছেন না। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। তিনি পদত্যাগ করুন।’’
পুর কর্তৃপক্ষই জানান, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে পুরসভার ১০টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ডেঙ্গির পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে চেষ্টা চলছে। নতুন একটি ফগিং মেশিন কেনা হয়েছে। দ্রুত আরও ৪টি আনা হবে। ২০টি নতুন স্প্রে মেশিন কেনা হয়েছে। ওয়ার্ডগুলিতে বেশি করে ব্লিচিং, চুন পাঠানো হচ্ছে। নিকাশি পরিষ্কারের কাজ সাধারণত জানুয়ারি থেকে শুরু হয়। এ বার কয়েক দিনের মধ্যেই সেই কাজ শুরু করা হবে।