প্রতীকী ছবি।
বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাগুড়ির যে এলাকা থেকে এক তরুণীর বিবস্ত্র ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়, সেখান থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাড়ি আরও এক নির্যাতিতার। গত ৫ অক্টোবর সন্ধেয় ওই কিশোরীও এক বন্ধুর ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়। তারপর ৯ অক্টোবর জল্পেশের মেলার মাঠের কাছে একটি ঝোপ থেকে তার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়।
মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ময়নাগুড়িতে যে ভাবে পরপর দু’টি তরতাজা মেয়ের প্রাণ গেল, তা নিয়ে উদ্বেগে এলাকার বাসিন্দারা। এর প্রধান কারণ, দু’টি মৃত্যুর ক্ষেত্রেই নির্যাতিতাদের ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক প্রতিবেশীর মুখে ময়নাগুড়িতে ওই তরুণীর নৃশংসভাবে খুন হওয়ার কথা শুনে আঁতকে উঠেন জল্পেশে খুন হওয়া কিশোরীর মা। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে আমার মেয়েকে আমার বুক থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তেমন ভাবে আর কোনও মায়ের বুক খালি হোক, আমি চাই না। পুলিশ যেন এ সব অপরাধীদের ফাঁসিতে ঝোলায়।’’
এ দিন সন্ধেয় ওই তরুণীকে খুনের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে বলা হচ্ছে, জল্পেশের কিশোরী খুন হওয়ার ঘটনাতেও মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাস জানান, জল্পেশ কাণ্ডে দ্বিতীয় অভিযুক্তকেও সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে রাজসাক্ষী করতে চায় পুলিশ। সে ওই খুনের ঘটনার পুরো বিবরণই পুলিশকে দিয়েছে, দাবি আইসি-র।
ঘটনায় উদ্বিগ্ন হেলাপাকরির নাগরিক মঞ্চও। ওই মঞ্চের সদস্য প্রাণেশ রায় বলেন, ‘‘একের পর এক এ ধরনের ঘটনায় আমরা চিন্তিত। পুলিশের উচিত অপরাধীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা। আমরা নাগরিক মঞ্চের তরফে পুলিশের কাছে সেই দাবি জানাব।’’ ওই এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা সুনীতি রায় বলেন, ‘‘আমি নিজে মেয়েটিকে ছোট থেকে চিনি। তাই কোনও ভাবে ওর এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না!’’
ওই তরুণীর কলেজের বেশ কিছু সহপাঠীও এ দিন তাঁর গ্রামের বাড়িতে যান। তাঁদের বক্তব্য, ময়নাগুড়ির মতো ছোট শহরে পরপর এই ধরনের ঘটনা এই শহরে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল। তাঁদের দাবি, পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষকেও এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে হবে।