পেটে ব্যথা নিয়ে বেলা এগারোটায় বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করান নাথুয়ার বাসিন্দা শুভম দাস। চিকিৎসক যখন তাঁকে দেখতে আসেন, তখন সন্ধে সাতটা গড়িয়ে গিয়েছে।
চার জনের জায়গায় দু’জন চিকিৎসককে নিয়ে চলছে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের এই মেডিসিন ওয়ার্ড। ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক শুক্রবার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনুপস্থিত থাকায় গোটা দিন কার্যত বন্ধ থাকে চিকিৎসা। অভিযোগ, বারবার কল বুক পাঠিয়েও লাভ হয়নি। ফলে প্রবল সঙ্কটের মুখে পড়েন ওই ওয়ার্ডের পুরুষ বিভাগের রোগীরা।
জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে বেড প্রায় প্রতিদিনই ভর্তি থাকে৷ ফলে হাতেগোনা চিকিৎসক থাকলে যে কোনও দিনই এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কিন্তু কেন এই ওয়ার্ডের অবস্থা, তার অবশ্য স্পষ্ট উত্তর দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ এ দিনের সমস্যার অভিযোগ কার্যত অস্বীকার করে সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, ‘‘এ দিনের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিকেল চারটের পরে কাজে যোগ দেন। তার আগে অন্য ওয়ার্ডের চিকিৎসকেরা গিয়ে ওই ওয়ার্ডে রোগীদের দেখে এসেছেন।’’
উচ্চ তাপমাত্রা নিয়ে বেলা বারোটা নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি হন রবিন মণ্ডল। তাঁর স্ত্রী সুমিতাদেবী বলেন, ‘‘বেলা এগারোটা নাগাদ ওঁকে ভর্তি করাই৷ তখন থেকেই ওয়ার্ডের নার্সরা চিকিৎসকের জন্য ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরে কল বুক পাঠান৷ শেষে বিকেল চারটের পর ডাক্তারবাবু দেখতে আসেন।’’ একই রকম অভিজ্ঞতা পুলিন রায়েরও।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, মেডিসিন বিভাগে এই মুহূর্তে চার জনের জায়গায় মাত্র দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন৷ তার মধ্যে এক জন অসুস্থ হয়ে পড়াতেই এ দিন সমস্যা হয়৷ কিন্তু জেলা হাসপাতালে এ ধরনের সঙ্কটজনক অবস্থার অভিযোগ উঠবে কেন? এর উত্তরে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘‘কেন এমন ঘটল তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব৷’’