বিধানসভা ভোটে জেলার সাফল্যের পর এ বার জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদে অনাস্থা আনার চিন্তাভাবনার কথা জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী।
শুক্রবার জলপাইগুড়িতে এক সাংবাদিক বৈঠক করে ওই হুমকি দিয়েছেন সৌরভবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিজে থেকে পদত্যাগ না করলে আমরা বর্তমান বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনব। বোর্ড আমাদের দখলেই আসবে বলে আমাদের আশা।’’ যদিও তৃণমূল জেলা সভাপতির বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাননি বামফ্রন্ট পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল তো দখলের রাজনীতিই করে। আগে উনি অনাস্থা আনুক, তার পরে এ নিয়ে যা বলার বলব।’’
১৯ আসনের জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের ১৪টি আসনই বামেদের দখলে রয়েছে। এরমধ্যে সিপিএমের ১৩টি, ফরওয়ার্ড ব্লকের ১টি আসন। সেখানে তৃণমূলের হাতে রয়েছে মাত্র ৪টি আসন। একটি আসনে জিতেছিল ঝাড়খন্ড মুক্তিমোর্চা। সৌরভবাবুর কথায়, ‘‘গত তিন বছরে উন্নয়নের কোনও কাজই করেনি, জেলা পরিষদ। তা এ বারের বিধানসভা ভোটে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। পরিষদের ১৬ আসনের এলাকায় তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বামফ্রন্টের নৈতিক অধিকারই নেই, ক্ষমতায় থাকার। ওদের উচিত, ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচনের মুখোমুখি হওয়া। সভাপতি পদত্যাগ না করলে দ্রুত আমরা অনাস্থা আনব।’’
কিন্তু মাত্র ৪জন সদস্য নিয়ে তৃণমূল কী করে অনাস্থায় রাস্তার যাবে! এই প্রশ্নের উত্তরে সৌরভের বক্তব্য, ‘‘বামফ্রন্টের ১৪ জনের অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। তাঁরাও সভাধিপতিকে সরাতে চান।’’
পরে সভাপধিপতি নুরজাহান বেগম জানান, তাঁরা সকলেই জোটবদ্ধ আছেন। তৃণমূল নানা কথা বলে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাইছে। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ পাঁচ বছরের জন্য আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। তা শেষ হতে আরও দুই বছরের মত বাকি। সেখানে নির্বাচিত বোর্ডের বিরুদ্ধে হুমকি, হুঁশিয়ারি দেওয়াটাই তো অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক। পঞ্চায়েত আর বিধানসভা ভোট এক নয়। তৃণমূল নেতাদের সেটা মনে রাখা দরকার।’’
তৃণমূলের তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, জেলা পরিষদে আগামী কিছুদিনের মধ্যে ঘেরাও, বিক্ষোভ এবং অবস্থান কর্মসূচি নেওয়া হবে।