হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা থানা-ফাঁড়ির আশপাশের গুটিকয়েক দোকান দিনের বেলায় খোলা। খাবার বলতে ডাল-ভাত।
আলুভাজা জুটলেই অনেক। নইলে মসুর ডালের খিচুড়ি। কাঁচা আনাজ মেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে অন্তত ৫ দিন। মাছ, মাংস মিলছে না, অল্পস্বল্প ডিম মিললেও দাম আকাশ ছুঁয়েছে। তাও আর কত দিন, ঠিক নেই। গ্রামীণ এলাকায় খেতের আনাজপাতি আর চাল দিয়ে কোনওক্রমে চলছে। এই অবস্থায় অনির্দিষ্টকালের বন্ধে কোনওভাবে শিলিগুড়ি থেকে রসদ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও শুরু হয়েছে পাহাড়ে।
গোটা পাহাড়ের আনাজপাতি, রসদ সরবরাহ হয় শিলিগুড়ির পাইকারি বাজার, নয়াবাজার এলাকা থেকে। কিন্তু বন্ধে গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। ট্রাক, পিকআপ ভ্যান নামলে যে কোনও কিছু ঘটতে পারে বলে চালকেরা বসে গিয়েছেন। আজ, শুক্রবার পাহাড়ের বোর্ডিং স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সমতলে নেমে যাওয়ার জন্য ছাড় দিয়েছে মোর্চা।
পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারেরা জানিয়েছেন, ভোর ৪ টার পর থেকে শ’খানেক বাস ও গাড়িতে করে ছাত্রছাত্রীদের নীচে নামিয়ে আনা হবে। থাকবে পুলিশি পাহারা। অভিভাবকদের হাতে ছাত্রছাত্রীদের তুলে দেওয়ার পর অনেক বাস, গাড়িই ফিরবে পাহাড়ে। আর সেই গাড়ির ভিতরে কিছু আনাজপাতি নেওয়ার চেষ্টাও শুরু হয়েছে পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে। কয়েকজন চালক রাজিও হয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে তা বন্ধ ব্যাগে দিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু সাধারণ পাহাড়বাসী নন, মোর্চার বিভিন্ন স্তরের নেতারাও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রসদের জন্য যোগাযোগ করেছেন বলে খবর। ব্যবসায়ীরা তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, মালপত্র বিক্রি করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু স্কুলের গাড়িতে মাল তোলা যাবে না।
কয়েকজন বাসিন্দা চালকদের অনুরোধ করেছেন, শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর পর সমতল থেকে আত্মীয়ের দেওয়ার বড় চেন বন্ধ ব্যাগ কোনওক্রমে নিয়ে আসার। তাতে ডাল, তেল, আনাজ ছাড়াও সাবান, পেস্টও থাকবে। একটি একটি ব্যাগ আনার জন্য ৫০০ টাকা অবধি চালকদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
দার্জিলিং সদর থানার কয়েকজন অফিসার জানান, জুনের মাঝ থেকে পাহাড়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। তাতে চাল-ডাল, তেল নুন বা আলুর পেঁয়াজের বস্তা বাড়ি ও ছোট ছোট দোকানে মজুত করে রাখার রেওয়াজ থাকে। কিন্তু হুট করে বন্ধ হওয়ায় অনেক দোকানদার তার অনেকটাই প্রথম দিনেই বিক্রি করে দিয়েছেন।
তেমনিই, সন্ধ্যার পর গ্রামীণ এলাকায় দোকানের পিছন থেকে জিনিসপত্র লুকিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে দোকানে যা মালপত্র জমা রয়েছে, তাতে খুব বেশি হলে আর ২/৪দিন চলতে পারে। সেই হিসাবে একদিনের ছাত্রছাত্রীদের বনধ ছাড়ে কিছু মালপত্র নিয়ে যেতে চাইছেন পাহাড়বাসীর একাংশ।