—ফাইল চিত্র
ছট পুজোয় জলপাইগুড়ি শহরের অন্যতম প্রধান ঘাট করলা নদীর কিং সাহেবের ঘাট। শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই ছট পুজো উপলক্ষে ঘাটে ছটব্রতী ও দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। বিকেলে ভিড় উপচে পড়ে। গাদাগাদি ভিড়ের মধ্যেই চলে পুজো। এবং সেই ভিড়ে মাস্কবিহীন মুখই বেশি ছিল বলে অভিযোগ। যদিও জলপাইগুড়ি পুরসভার দাবি, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে ভিড় অনেকটাই কম ছিল।
ছট পুজোকে ঘিরে কিং সাহেবের ঘাটে এ বছরে মেলা বসেনি ঠিকই। তবে ঘাট সংলগ্ন রাস্তার ধারে দোকান সাজিয়ে বসেছিলেন বিক্রেতারা। দণ্ডি কেটে রাস্তার উপর সাষ্টাঙ্গে শুয়ে ঘাটে যান অনেকেই। এ বছরেও সেই ছবি দেখা গেছে শহরে। এক পুণ্যার্থীর আত্মীয় উত্তম পাসোয়ান বলেন, ‘‘মানত করলে এই দণ্ডি কেটেই যেতে হবে। কিছু করার নেই।’’ করোনা নিয়ে ভয় করে না? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘নিষ্ঠা সহকারে ছট পুজো করছি। ভয়ভীতি সব ঠাকুরের কাছে সঁপে দিয়েছি। সব ঠাকুরের ইচ্ছে!’’ ঘাটে আসা দর্শনার্থী কৃষ্ণা মণ্ডল বলেন, ‘‘বরাবরই ছট পুজো দেখতে আসি। যতই করোনা সংক্রমণ বাড়ুক না, কেন ছট পুজোর দিন ঘাটে আসব না, ভাবতেই পারি না।’’
যানজট এড়াতে এ দিন টোটো চালকদের কিং সাহেবের ঘাটে যেতে দেয়নি পুলিশ। তাতেও ভিড় আটকানো যায়নি। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়েছিল শহরের অন্যান্য ঘাটগুলিতেও। মাসকলাইবাড়ি, সমাজ পাড়া, দিনবাজারের ঘাটেও ভিড় ছিল যথেষ্ট। শহরের ঘাটগুলিতে এ দিন বাজির শব্দ শোনা না গেলেও, ঢাক, ব্যান্ড পার্টি, ডিজে, সাউন্ড বক্সের আওয়াজ যথেষ্ট চড়া ছিল বলে অভিযোগ। প্রশাসনের তরফে শব্দ বিধি নিয়ন্ত্রণের কোনও উদ্যোগ ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বাজি ফাটানো বন্ধ করা গেলেও শব্দ বিধি মেনে চলার প্রতি নজরদারি চালানোর ক্ষেত্রে তেমন নির্দেশ ছিল না।’’ পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সন্দীপ মাহাতো বলেন, ‘‘ঘাটে খুব যে বেশি ভিড় হয়েছিল, তা বলা যাবে না। অন্যান্য বছরে তো অনেক বেশি ভিড় হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘শহরে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে প্রতিদিনই। সকলের কাছে আবেদন মাস্ক পরুন। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে সকলকেই।’’ করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘ছট পুজোর ঘাটগুলিতে ভিড় হয়েছে বলে শুনেছি। ভিড় এড়াতেই হবে।’’