বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি নির্মল দাম সহ দলের ১০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করল পুলিশ! পুলিশকর্মীদের সরকারি কাজে বাধাদান, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, বিনা অনুমতি নিয়ে অবৈধ জমায়েত, মিছিল ও পথ অবরোধের অভিযোগে রবিবার পুলিশ নির্মলবাবু সহ বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩৫৩, ৩ পিডিপিপি, ১৪৩ ও ৩২ পুলিশ অ্যাক্ট ধারায় মামলা দায়ের করেছে! তার মধ্যে ৩৫৩ ও ৩ পিডিপিপি ধারা জামিন অযোগ্য।
রায়গঞ্জ থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাসের দাবি, বিজেপির অভিযুক্ত অজ্ঞাতপরিচয় নেতা কর্মীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করবে।
এ দিকে, পুলিশের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও তৃণমূলের নির্দেশে কাজ করার অভিযোগে আজ, সোমবার দলের মহিলা সংগঠনের সদস্যরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন বলে দাবি করেছেন নির্মলবাবু। তাঁর হুঁশিয়ারি, মিথ্যা মামলায় দলের এক জনকেও পুলিশ গ্রেফতার করলে প্রয়োজনে আগুন জ্বলবে।
উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়ায় দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপরে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শনিবার ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে যায় রায়গঞ্জের সুপারমার্কেট এলাকায়। দিলীপবাবুর উপরে তৃণমূল হামলা চালিয়েছে। এই অভিযোগ তুলে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে ওই দিন বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দামের নেতৃত্বে দলের কয়েকশো নেতা, কর্মী ও সমর্থক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল নিয়ে রায়গঞ্জের মহাত্মাগাঁধী রোডে দলের জেলা কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে সুপারমার্কেট এলাকায় গিয়ে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ের সামনে মিছিলটি দাঁড়িয়ে পড়ে। বিজেপির নেতা কর্মীরা সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল জ্বালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ কুশপুতুলটি ছিনিয়ে নেয়।
তার পরেই পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি বেধে যায়। সেই সময় আন্দোলনকারীরা বিন্দোল থেকে রায়গঞ্জগামী একটি সরকারি বাসে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এর পর পুলিশের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বিজেপির নেতা ও কর্মীরা প্রায় একঘণ্টা ওই এলাকার রাজ্যসড়ক অবরোধ করেন।
নির্মলবাবুর দাবি, তৃণমূল সরকারি ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে পুলিশকে বেআইনি ভাবে ব্যবহার করে বিজেপির শক্তি হ্রাস করার ছক করেছে। ওই দিন তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা সরকারি বাসে ভাঙচুর চালিয়েছে। কিছু দিন আগে তৃণমূল একই জায়গায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল জ্বালিয়েছিল। তখন পুলিশ শাসকদলকে নিরাপত্তা দিয়েছে। আর এখন তৃণমূলের নির্দেশে পুলিশ আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের পাল্টা দাবি, পুলিশ আইন মেনেই কাজ করেছে। জেলায় শান্তিশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন বজায় রাখতে তৃণমূল গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করে বিজেপিকে নিশ্চিহ্ন করবে।