উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার এবং আপত্তিকর কাজকর্মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সমস্ত শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক ডাকলেন উপাচার্য। আগামী ৮ মার্চ ওই বৈঠক হবে।
কলা বিভাগের ডিনকেও বৈঠকে ডাকা হয়েছে। ওই বিভাগের প্রধান উৎপল মণ্ডলের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও নানা আপত্তিকর কাজকর্মের অভিযোগ ওঠায় এবং তা নিয়ে পড়াশোনার পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ায় অসন্তুষ্ট উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ। সোমবার প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে পড়ুয়াদের একাংশ ক্লাস বয়কটও করেছেন। ক্যাম্পাসে পোস্টার, ফ্লেক্সও লাগানো হয়েছে। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করছেন পড়ুয়া এবং শিক্ষিক-অধ্যাপকদের একাংশ।
শিক্ষকদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রভাবও রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ। সে কারণে সমস্ত শিক্ষক-অধ্যাপকদের ডেকে উপাচার্য কড়া বার্তা দিতে চাইছেন বলে জানা গিয়েছে।
উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘বাংলা বিভাগের প্রধানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। অপর পক্ষ অভিযোগ মানতে চাইছেন না। দুই পক্ষই এসেছিলেন। তবে এ সব নিয়ে কোনও ভাবেই যেন পড়াশোনা, ক্লাস বিপর্যস্ত না হয় তা সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কী হয়েছে, তা দেখতে ওই বিভাগের সমস্ত শিক্ষক-অধ্যাপকদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছি। সেখানে আলোচনার করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে ধর্না আন্দোলনের জেরে সোমবার অনেক ক্লাস হয়নি। তবে পড়াশোনা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে উপাচার্য সতর্ক করার পর মঙ্গলবার সমস্ত ক্লাস হয়েছে।
বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে মন কষাকষি চলছেই। উৎপলবাবু বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের একাংশ কেন এমন অভিযোগ তুলছে বুঝতে পারছি না। সে রকম কোনও ব্যাপার ঘটেছে বলে মনে করি না।’’
তবে উৎপলবাবুর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, একটি ছাত্রকে তিনি গাছে জল দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ওই ছাত্রটি সেই কাজ না করলে উৎপলবাবু পরে তাঁকে বকাঝকা করেছিলেন। তবে তা নিয়ে ওই ছাত্র বা পড়ুয়াদের একাংশের মন ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।
বিভাগীয় প্রধান উৎপলবাবুর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার, আপত্তিকর কাজের অভিযোগ নিয়ে তাঁর অপসারণ দাবি করে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের অনেকের সঙ্গেই বিভাগীয় প্রধান দিনের পর দিন দুর্ব্যবহার করছেন। ক্লাসে পড়ানোর সময়ও ছাত্রীদের অনেককে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে খারাপ কথা বলছেন। ‘ছাগল’, ‘গরু’ বলেও গালিগালাজ করছেন। এমনকী মোবাইলে আপত্তিকর এসএমএস পাঠানোর অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ। তাদের দিয়ে চা, জল দেওয়ানোর মতো দফতরের কর্মীদের কাজ করানো হয় বলে জানিয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের অনেকে। সতীর্থ শিক্ষকদের একাংশের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় প্রধান ছাত্রছাত্রীদের কাছে বদনাম করেন বলে শিক্ষকদের অনেকে অভিযোগ জানিয়েছেন। এই সব অভিযোগই অবশ্য অস্বীকার করা হয়েছে।