বিয়ের এক মাস আগে এক তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের কুনোরে। মৃতার নাম মাম্পি বিশ্বাস (১৯)।
এ দিন বাড়ির গোয়ালঘরের টিনের চালার বাঁশের সিলিং থেকে মাম্পির ঝুলন্ত দেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন পরিবারের লোকেরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। মঙ্গলবার দুপুরে দেহটি ময়নাতদন্ত করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, পরিবারের লোকেদের ঠিক করা পাত্র পছন্দ না হওয়ায় হতাশায় তিনি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
আরও পড়ুন:জয় এড়িয়ে উন্নয়ন-কথা অমিতের
কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি বিচিত্রবিকাশ রায়ের দাবি, মৃতার পরিবারের লোকেদের দাবি অনুযায়ী একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পাত্র পছন্দ না হওয়ায় ওই তরুণী কিছু দিন ধরে হতাশায় ভুগছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে তিনি আত্মঘাতী হলেন, তা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্পষ্ট ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, মাম্পি বছর দু’য়েক আগে মাধ্যমিক পাশ করার পরে পড়াশোনা ছেড়ে দেন। তাঁর বাবা গোকুল বিশ্বাস বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে ঠিকা কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী গৃহবধূ। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মাম্পি বড়। প্রায় দেড় মাস আগে এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে মাম্পির বিয়ে ঠিক করেন পরিবারের লোকেরা। ওই যুবকের নিজস্ব চাষের জমি রয়েছে। এ ছাড়াও তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করেন। কিছু দিন আগে পাত্রপক্ষের লোকেরা মাম্পিকে আশীর্বাদও করে যান। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মাম্পির বিয়ের দিনক্ষণও প্রাথমিক ভাবে চূড়ান্ত করে ফেলেন দুই পরিবারের লোকেরা।
মাম্পির বাবা গোকুলবাবুর দাবি, ‘‘মেয়ের যে পাত্রকে পছন্দ হয়নি, সে কথা ও আশীর্বাদের পরে আমাদের জানায়। কিন্তু সামাজিক রীতি ও ভবিষ্যতে মেয়ের বিয়ের সমস্যার হতে পারে বলে আশঙ্কা করে তখন আর আমাদের কিছু করার ছিল না। সেই থেকে ও মনমরা হয়ে পড়েছিল। মেয়ের বিয়ের জন্য কেনাকাটাও শুরু করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পাত্র পছন্দ না হওয়ায় মেয়ে আত্মহত্যা করবে, এটা মানতে পারছি না।’’
তিনি জানান, বিয়ে ঠিকঠাক হওয়ার আগে মেয়ে পাত্রকে পছন্দ নয় বলে তাঁদের জানালে, এত বড় সর্বনাশ হত না! তিনি জানিয়েছেন, ওই দিন রাতে পরিবারের লোকেরা বাড়িতে ছিলেন না। সেই সুযোগে মাম্পি গোয়ালঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পুলিশের দাবি, পাত্র সুশ্রী না হওয়ায় মাম্পির পাত্রকে পছন্দ হয়নি। তবে কেন তিনি সে কথা আগেই পরিবারের লোকেদের জানাননি ও তাঁর আত্মহত্যার পিছনে প্রেমঘটিত কোনও কারণ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।