নিদর্শন: তপন দিঘি থেকে উদ্ধার হওয়া প্রাচীন মূর্তি। নিজস্ব চিত্র
তপন দিঘি সংস্কার প্রকল্পে মাটি কাটতে গিয়ে মিলল পাথরের তৈরি প্রাচীন মূর্তি। পুরাতত্ত্ববিদদের ধারণা, এটি একটি ভেঙে যাওয়া অঘোর শিবমূর্তি। অঘোর শিবের বাহন ও সঙ্গী-সাথীরা ভেঙে গিয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক স্বাতী রায় বলেন, ‘‘এটি একটি অঘোর শিবমূর্তি। এটি দশম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে নির্মিত বলে অনুমান করা যায়।’’
পুরাতত্ত্ববিদদের ধারণা, তপনের এই মজে যাওয়া দিঘির মধ্যেই এই অঘোর শিবের বাহন এবং সঙ্গী-সাথীদেরও খোঁজ মিলতে পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, সব মিলিয়ে মূর্তিটিতে অনেকগুলি চরিত্রই হয়তো ছিল, যা এখন ভেঙে খণ্ড খণ্ড হয়ে গিয়েছে। সেগুলির অবিলম্বে খোঁজ করা দরকার। সেই খোঁজ যে করা হবে সে ব্যাপারে প্রশাসনও আশ্বাস দিয়েছে।
এলাকাবাসীর একাংশেরও দাবি, ঐতিহ্যবাহী ওই দিঘিতে আরও প্রাচীন মূর্তি ও ইতিহাস লুকিয়ে থাকতে পারে। দিঘি আরও খনন করলে সে সব বেরিয়ে আসবে। দিঘির তীরে সংগ্রহশালা তৈরি করে সে সব সামগ্রী সংরক্ষণের দাবি
তুলেছেন তাঁরা।
তপন ব্লকের বিডিও ছোগেল মোক্তান তামাং বলেন, ‘‘পাথরের তৈরি পুরনো মূর্তিটি উদ্ধার করা হয়েছে। বিশদে জানতে ইতিহাসবিদদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’’
তপন থানার ওসি সতকার সাংবো জানান, প্রায় ৮ ইঞ্চি লম্বা মূর্তিটির একটি অংশ ভাঙা। তপন দিঘি সংস্কারের সময় মাটি কাটতে গিয়ে সেটি বেরিয়ে আসে। মূর্তিটি থানায় রাখা হয়েছে।
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন দিঘির আয়তন প্রায় ৮৭ একর। এই জলাশয়ের সঙ্গে নানা উপকথা জড়িত রয়েছে। যেমন জড়িত আছে বাণ রাজার কথা। গঙ্গা দূরে বলে অনেকেই এই দিঘিতে তর্পণ করতে আসতেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন জানান। সম্ভবত তর্পণ থেকেই এলাকার নাম হয় তপন। বর্তমানে মজে যাওয়া ওই দিঘি সংস্কার করে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে রাজ্য পর্যটন দফতর প্রায় ৩৭ কোটি টাকা
বরাদ্দ করেছে।