কী রহস্য নিশীথে

প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও ঘরোয়া আলোচনায় তৃণমূল নেতাদের অনেকেই বলছেন, বিজেপির এক নেতার সঙ্গে সম্প্রতি ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন নিশীথ। সেই নেতা আবার এক সময়ে তৃণমূলে ছিলেন।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ 

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২২
Share:

বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা নিশীথ প্রামাণিক।

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তাঁকে বহিষ্কারের খবর জানিয়েছেন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। কিন্তু কেন বহিষ্কার করা হল দিনহাটার যুব তৃণমূল নেতা নিশীথ প্রামাণিককে? সে কথা ফেসবুকে পোস্ট করেই বা জানানো হল কেন? এই নিয়ে জেলা তৃণমূল বা যুব তৃণমূলের কোনও নেতাই প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি। পার্থ শুধু জানিয়েছেন, বহিষ্কার রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই।

Advertisement

প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও ঘরোয়া আলোচনায় তৃণমূল নেতাদের অনেকেই বলছেন, বিজেপির এক নেতার সঙ্গে সম্প্রতি ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন নিশীথ। সেই নেতা আবার এক সময়ে তৃণমূলে ছিলেন। অভিযোগ, শুক্রবার বিজেপির সভা ভরাতে যাঁরা হাজির ছিলেন, তাঁদের মধ্যে নাকি নিশীথের লোকজনও ছিল।

তৃণমূলের অন্য একটি অংশের মতে, তবে শুধু এটুকুর জন্যই বহিষ্কার করা হয়েছে, এটা মনে করা ঠিক হবে না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকে উত্তপ্ত দিনহাটা। সেখানকার দাপুটে যুব নেতা নিশীথ। তিনি সংগঠনের হালও শক্ত হাতে ধরেছিলেন। নিশীথকে বহিষ্কারের বিরুদ্ধে এ দিন দিনহাটায় তাঁর অনুগামীরা বন্‌ধ ডাকেন। অবরোধও করেন। তৃণমূল পার্টি অফিস ভাঙচুরও করা হয়। এর পরে তৃণমূলের কোনও কোনও নেতা বলেন, মূল তৃণমূলের সঙ্গে তো বটেই, যুবর মধ্যেও বিরোধ তৈরি হয়েছিল। তার উপরে নিশীথের বিরুদ্ধে দলেরই একটি অংশ নানা সময় একাধিক অভিযোগ তুলেছে। তাতে পুজো ও সংগঠন পরিচালনার জন্য প্রচুর টাকা খরচ তার উৎস নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

Advertisement

যদিও নিশীথ এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বহিষ্কারের কথাই মানতে চাননি। নিশীথের মতে, ‘‘হাস্যকর অভিযোগ। আমি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। একজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। এমন কিছু যে ঘটেছে, তা তিনি জানেনই না।’’ একই সঙ্গে নিশীথ বলেন, ‘‘ফেসবুক পোস্ট দিয়ে কখনও বহিষ্কার করা হয় না। নিয়ম অনুযায়ী আমাকে শো কজ করতে হবে। তা হয়নি।’’

জেলা যুব সভাপতি পার্থ অবশ্য বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই নিশীথকে বহিষ্কার করা হয়।” শনিবার সকালে পার্থর অফিসে হাজির হওয়া দিনহাটার এক যুব নেতা বলেন, “বিজেপির সঙ্গে নিশীথের সখ্যের বেশ কিছু প্রমাণ দলের কাছে গিয়েছে। তাই ওই সিদ্ধান্ত।” কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “আমি বাইরে আছি। জেলায় ফিরে খোঁজ নেব।” দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহও ওই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “নিশীথের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ভাবে কোনও কথা হয়নি, এটা বলতে পারি। আর ওই বিষয়টি তৃণমূলের দলীয় ব্যাপার। তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন