অচল: খুচরো জমে বিপাকে ব্যবসায়ীরা। নিজস্ব চিত্র
পান-সুপারি বিক্রেতা থেকে মুদির দোকানি—কারও কাছে ১ লক্ষ টাকা, আবার কারও দোকানে হেলায় পড়ে ৩০-৪০ হাজার টাকার এক ও দু’টাকার কয়েন। নোটবন্দির পর থেকে দেড় বছর ধরে লক্ষ লক্ষ কয়েন অচল পয়সার মতো পড়ে থাকায় ওই সমস্ত ছোট বিক্রেতাদের ব্যবসাপত্র প্রায় লাটে ওঠার জোগাড়। এক টাকার ছোট কয়েন আগেই অচল হয়েছে বলে অভিযোগ।
ওই ব্যবসায়ীরা ব্যাঙ্কে দরবার করেও খুচরোর বদল পাননি বলে অভিযোগ। ফলে বড় অঙ্কের খুচরো পয়সা দোকান ও বাড়িতে পড়ে ‘ফ্রিজ়’ হয়ে থাকায় বালুরঘাটে নগদ টাকার টান চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তহবাজারের পান-সুপারি ও তামাকের ব্যবসা দুলাল কুণ্ডুর। শহরতলির ছোট দোকানি উজ্জ্বল দাস রবিবার সকালে তাঁর দোকানে গিয়ে ৬০০ টাকার পান, মিষ্টিমশলা, জর্দা, সিগারেট কেনেন। নোটের সঙ্গে মাত্র ২০ টাকা কয়েনে দাম মেটাতে গেলেই দুই ব্যবসায়ীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুরু হয়। দুলালবাবুর বক্তব্য, ২০ হাজার টাকার উপর খুচরো পয়সা জমে গিয়েছে। মহাজন থেকে ব্যাঙ্ক কেউ তা নিচ্ছে না। উজ্জ্বল বলেন, ‘‘ছোট দোকান চালাই। খরিদ্দারেরা খুচরো পয়সাই দেন। না নিলে বিক্রিবাট্টাই তো বন্ধ হয়ে যাবে!’’ শেষে ২০ টাকা বাকি রেখেই মাল নিতে হল উজ্জ্বলকে। পাশের মুদির দোকানি রাজু গুপ্ত জানান, প্রায় এক লক্ষ টাকার এক ও দু’টাকার কয়েন বাড়িতে ফেলে রেখেছেন। ব্যাঙ্ক ও ব্যবসায়ী সমিতির দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি।
উদ্বিগ্ন বণিকসভা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও সমস্যা মেটেনি বলে সমিতির সহসভাপতি গোপাল পোদ্দারের অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের দাবি, কাজের চাপে এত সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে জেলা প্রশাসনকে, লিড ব্যাঙ্ক অফিসারকেও বলা হয়েছে। লিড ব্যাঙ্ক ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার মানসকুমার দাস সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘এক টাকার ছোট কয়েন অচল নয়। অথচ এ জেলায় ওই কয়েন কেউ আর নিতে চাইছেন না। কয়েন জমা নিতে কী উদ্যোগ নেওয়া যায় দেখা হচ্ছে।’’