কাউন্সিলরদের মোবাইল, গাড়ির খরচ নিয়ে ক্ষোভ

তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাটের পুরপ্রধান সমেত একাধিক সদস্য এবং এগজিকিউটিভ অফিসারের জন্য দামী মোবাইল কেনা এবং চড়া ভাড়া দিয়ে গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ তুলে সরব হলেন বিরোধী বাম কাউন্সিলারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:০৮
Share:

তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাটের পুরপ্রধান সমেত একাধিক সদস্য এবং এগজিকিউটিভ অফিসারের জন্য দামী মোবাইল কেনা এবং চড়া ভাড়া দিয়ে গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ তুলে সরব হলেন বিরোধী বাম কাউন্সিলারেরা।

Advertisement

নাগরিকদের করের টাকায় এ ভাবে বিলাসিতার নামে নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবি করেন বিরোধী বাম কাউন্সিলার সুচেতা বিশ্বাস। তাঁর অভিযোগ, চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহা প্রয়াত হওয়ার পরে তাঁর গাড়ি ব্যবহার করতেন ভাইস চেয়ারম্যান তথা ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান রাজেন শীল।

ওই গাড়িটির প্রতি মাসে ভাড়া দেওয়া হয় ১২ হাজার টাকা। তা সত্ত্বেও সম্প্রতি একটি নতুন শৌখিন গাড়ি পুরসভা থেকে মাসে ২৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে পুরপ্রধান ব্যবহার করছেন। প্রতিটি প্রায় ১৪ হাজার টাকা দামের মোবাইল সেট কিনে দিয়ে পুরসভার ছয় কর্তাকে দেওয়া হয়েছে। পোস্টপেড সংযোগও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন জেলা কালেক্টরেটের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মোহান্ত। তাঁর উপর ত্রাণ দফতরের দায়িত্ব থাকায় প্রশাসনের তরফ থেকেও তাঁকে একটি মোবাইল দেওয়া হয়েছে। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যা বলার পুরকর্তৃপক্ষ বলবেন।’’ পুরপ্রধান রাজেনবাবু বলেন, ‘‘কাজের সুবিধার জন্য অফিসার এবং সদস্যদের মোবাইল দেওয়া হয়েছে। আগের গাড়িটি ভাইস চেয়ারম্যানের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। তাই নতুন ওই গাড়িটি ভাড়া করা হয়। বিরোধীদের অভিযোগ ঠিক নয়।’’ তবে তৃণমূলের বর্তমান ১৩ জন সদস্যের মধ্যে পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান ও চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের ৩ সদস্য মিলে যাবতীয় সিদ্ধান্ত ও সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে শাসক দলেরই বাকি ৮ জন সদস্য রেগে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

পুরসভার ২৫টি আসনের মধ্যে ১১টি বিরোধী বামেদের দখলে। চয়নিকাদেবীর মৃত্যুর পর প্রায় দেড় বছর কেটে গেলেও তার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে আজও উপনির্বাচন হয়নি। ১১ জন বিরোধী আরএসপি এবং সিপিএমের কাউন্সিলার একজোট হয়ে বাড়তি খরচের বিলাসিতা ও অপচয়ের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার সাধারণ সভা বয়কট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, পুরসভার বোর্ড অব কাউন্সিলরের সভা এড়িয়ে ১৯ জন কাউন্সিলারকে (শাসক ও বিরোধী) অন্ধকারে রেখে বর্তমান পুরকর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলকে নিয়ে সভা করে পুরসভার কমিউনিটি হল হস্তান্তর থেকে শুরু করে কোটি টাকার সামগ্রী কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ পুর আইনে রয়েছে চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার বেশি কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কোনও জায়গা এবং সামগ্রী কিনতে গেলে বোর্ড অব কাউন্সিলারের সভায় তুলে নির্দিষ্ট কমিটি গড়তে হয়। এক্ষেত্রে পুরকর্তৃপক্ষ কোনও নিয়মের তোয়াক্কা করছে না বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন