Coronavirus

করোনা রুখেও ভয় সংসারের অনটনে

করোনা-আবহে এখনই ফের বারাসতের কর্মস্থলে ফিরতে চান না তিনি। সংসার টানতে কাজ চান এলাকায়।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ০৬:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি

২২ দিন করোনার সঙ্গে লড়ে জিতে বাড়ি ফিরেছেন মালদহের প্রথম করোনা আক্রান্ত। কিন্তু সংসার চালানোর ‘যুদ্ধে’ কী ভাবে জিতবেন, তা-ই ভাবছেন মানিকচকের চৌকি মীরদাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুনটোলা গ্রামের সেই বাসিন্দা।

Advertisement

করোনা-আবহে এখনই ফের বারাসতের কর্মস্থলে ফিরতে চান না তিনি। সংসার টানতে কাজ চান এলাকায়। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, জবকার্ড থাকলেও ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ পাচ্ছেন না। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে বলেও লাভ হয়নি বলে তাঁর নালিশ। তিনি জানান, মানিকচক ব্লক জুড়ে প্রচুর আমবাগান থাকলেও গাছ থেকে আম পাড়ার কাজও যে করবেন তারও উপায় নেই। কারণ আমফান ঘূর্ণিঝড়ে গাছ থেকে পড়ে গিয়েছে বেশিরভাগ আম। এমন পরিস্থিতিতে রেশনের খাদ্যসামগ্রীতেই স্ত্রী, দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে কোনও রকমে দিন কাটছে তাঁর।

মালদহে ২৬ এপ্রিল প্রথম করোনা পজ়িটিভ রোগীর খোঁজ মেলে নতুনটোলা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চল্লিশের ওই ব্যক্তি আগে ভিন্ রাজ্যে কাজ করলেও জানুয়ারি মাস থেকে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের বালেশ্বর এলাকায় বৈদ্যুতিক টাওয়ার তৈরির কাজ করছিলেন। তাঁর সঙ্গে নতুনটোলা গ্রামের আরও পাঁচ জন শ্রমিক ছিলেন। ২৩ এপ্রিল বারাসত থেকে গাড়ি ভাড়া করে তাঁরা জেলায় ফিরে আসেন। সকলকে মানিকচকের একটি স্কুলে সরকারি কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছিল। ২৬ এপ্রিল তাঁর লালারসের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ওই সময়ে মালদহে কোভিড হাসপাতাল চালু হয়নি। তাঁকে ২৭ এপ্রিল শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২০ মে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

Advertisement

তাঁর অভিযোগ, প্রায় এক মাস ধরে তিনি বাড়িতে কর্মহীন হয়ে রয়েছেন। সংসার চলবে কী করে, সেই প্রশ্নই বড় হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘‘বারাসত থেকে কাজের জন্য ফোন করে ডাকা হচ্ছে। কিন্তু ওখান থেকেই সংক্রমণ নিয়ে ফিরেছিলাম। তাই এখনই সেখানে ফিরতে নারাজ। গ্রামেই কাজ চাইছি। কিন্তু পাচ্ছি না।’’

তাঁর স্ত্রীয়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের দু’জনেরই ১০০ দিনের প্রকল্পের জব কার্ড রয়েছে। কিন্তু কাজ পাচ্ছি না।’’ ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘শুনেছি পরিযায়ী শ্রমিকদের ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়া হবে, চালের জন্য কুপন দেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই পাইনি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে কাজের জন্য বলেছিলাম। তিনি কাজ নেই বলে জানিয়ে দেন।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অভিরাম মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘উনি আমার কাছে কোনও কাজ চাননি। কেন এমন বলছেন জানি না।’’ চৌকি মীরদাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান আসিবুল আলি বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি ১০০ দিনের প্রকল্পে আবেদন করলে অবশ্যই কাজ পাবেন।’’ মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল এ বিষয়ে বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তিকে ১০০ দিনের প্রকল্পে দ্রুত কাজ দেওয়ার জন্য বিডিওকে পদক্ষেপ করতে বলছি।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement