যোদ্ধা: মানিকচকের গুলিবিদ্ধ শিশু মৃণাল এখন অনেকটাই সুস্থ। নিজস্ব চিত্র
মায়ের কাছে চকোলেট দেখে হাত বাড়িয়ে চেয়ে নিল মালদহের মানিকচক থানার রামনগর গ্রামের গুলিবিদ্ধ শিশু মৃণাল মন্ডল। নিজেই প্যাকেট থেকে চকোলেট খুলে মুখে পুড়ে দিল সে। আট দিন বাদে পুরোপুরি জ্ঞান ফিরল মৃণালের। যদিও এখনও কথা বলতে পারেনি গুলিবিদ্ধ ওই শিশু। তবে শিশুটি চিকিৎসায় ক্রমশ সাড়া দেওয়ায় আশাবাদী চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, শিশুটির প্রাণহানির আশঙ্কা এখন অনেকটাই কম। আর চোখের সামনে ছেলে প্যাকেট থেকে চকোলেট খুলে খাওয়ায় যেন প্রাণ ফিরে পেলেন মানিকচকের পঞ্চায়েত সদস্যো পুতুল মণ্ডল সহ পরিবারের লোকেরা।
৩০ অগস্ট বিকেল চারটে নাগাদ বাড়ির বারান্দায় খেলা করছিল মৃণাল। সেই সময় গুলি কপালের উপরের অংশে লেগে খুলি ফাটিয়ে বেরিয়ে যায়। ওই দিনই মৃণালকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে স্থানান্তরিত করে দেন কলকাতায়। তবে তিন বছরের গুলিবিদ্ধ শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছিল শহরের এক নার্সিংহোমে। নিউরো সার্জেন সুষেণ চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে শিশুটি ভর্তি ছিল। তিনি বলেন, “প্রথম দফায় অস্ত্রোপচার করা পরেও শিশুটির প্রাণহানির সম্ভাবনা ছিল। এখন সেই সম্ভাবনা অনেকটাই নেই। পরিবারের সকলকে চিনতেও পারছে এখন। অক্সিজেন ছাড়ায় শিশুটি রয়েছে। এখনও কথা বলতে পারছে না। আরও চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে মৃণালের।”
শিশুটি চিকিৎসায় সাড়া দিলেও তার কী করে গুলি লাগল, তা নিয়ে রহস্য কাটেনি। গত ৩ সেপ্টেম্বর ঘটনাস্থলে তদন্তে গিয়েছিলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ চিত্রাক্ষ সরকার। তিনি বলেছিলেন গুলি খুব কাছ থেকেই চলেছে। এমনকি, বাড়িতেই শিশুটি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পুলিশেরও প্রাথমিক তদন্তে অনুমান গুলি বাইরে থেকে নয়, বাড়ির ভিতরেই চলেছে।
এ দিন অসুস্থ শিশুকে নার্সিংহোমে দেখতে যান তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত নিয়ে কাজকর্ম থাকায় কিছু দিন আসতে পারছিলাম না। তবে ফোনে যোগাযোগ করেছি। এ দিন সময় পেয়েই দেখতে গিয়েছিলাম।”