পুরুষোত্তম সানি
পাহাড়ে প্যারাগ্লাইডিং করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন প্যারাগ্লাইডিংয়ের গাইড। গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকা পর্যটকও।
এ দিন দুপুরে কালিম্পং থানার ডেলোর অদূরে গ্রাহামস হোমের মাঠের পাশের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পুরুষোত্তম সানি (২২)। তিনি নেপালের বাসিন্দা। জখম পর্যটকের নাম গৌরব চৌধুরী (৩৮)। তিনি পটনার বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি গাড়ি নির্মাতা সংস্থার অফিসার। তাঁর পা ও কোমরে গুরুতর চোট রয়েছে।
পুলিশের অনুমান, নামার সময়ে মাটি থেকে প্রায় ২০০ ফুট উঁচুতে আচমকা প্রবল বাতাসের মুখে পড়ে প্যারাগ্লাইডার। তখনই সেটির গাইড নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। গ্রাহামস হোমের ফুটবল মাঠের পাশের পাহাড়ি ঢালের একটি গাছে আটকে যায় সেটি। সেখান থেকে ছিটকে মাঠের ধারের একটি বাড়ির ছাদে পড়ে যান চালক ও আরোহী পর্যটক। কালিম্পং হাসপাতালে নিয়ে গেলে চালককে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আহত পর্যটকের চিকিৎসা চলছে। তাঁকে শিলিগুড়িতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
জিটিএ সূত্রের খবর, ডেলো থেকে রোজই প্যারাগ্লাইডিং হয়। আবহাওয়া ভাল থাকলে সেখান থেকে উড়ে গ্রাহামস হোমের মাঠে অবতরণ করান প্যারাগ্লাইডার। ওই এলাকায় অন্তত ৫ জন প্রশিক্ষিত প্যারাগ্লাইডার রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই মানালি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্যারাগ্লাইডিং করতে গিয়ে এ বারই প্রথম দুর্ঘটনা হল। অবশ্য চলতি বছরেই সিকিমে প্যারাগ্লাইডিংয়ের সময়ে দুর্ঘটনায় এক চালকের মৃত্যু হয়। একজন পর্যটক জখম হন। সেখানেও আচমকা ঝোড়ো বাতাসের মুখে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
পুলিশের দাবি, প্যারাগ্লাইডিংয়ের চালক হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ থাকতে হয়। তা ওড়ানোর জন্য কোনও আলাদা লাইসেন্স দরকার হয় না বলে জিটিএ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। তবে উপরে ওঠার পরে বাতাসের গতির বেশি হেরফের হলে বিপদ থেকে বাঁচতে চালককে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে বলে একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জানিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছিল তা পর্যটক সুস্থ হলে বোঝা যেতে পারে বলে বাকি গাইডদের ধারণা। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘প্যারাগ্লাইডিং, প্যারাসোলিং, র্যাফটিংয়ের চালক, গাইডদের প্রশিক্ষণের ধারাবাহিকতা দরকার। প্রবীণ, দক্ষ প্রশিক্ষকদের এনে ঝুঁকির সময়ে কী ভাবে নিরাপদে নামা যায় সেটারও নিয়মিত মহড়ার প্রয়োজন রয়েছে। জিটিএ, পর্যটন দফতরের কাছে বিষয়টি জানাব।’’ জিটিএর তত্ত্বাবধায়ক চেয়ারম্যান অনীত থাপা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি জানান, অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের বিষয়গুলো নিয়ে এবং সেগুলো কী অবস্থায় রয়েছে তা নিয়ে শীঘ্রই আলোচনায় বসা হবে।