বাড়ছে কেপমারি, আতঙ্কে যাত্রীরা

একই দিনে তিনটি কেপমারির অভিযোগ উঠল তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে। এই টার্মিনাসে স্থানীয় এবং দুরপাল্লা মিলিয়ে প্রায় ৩০০ বাস প্রতিদিন টার্মিনাস থেকে ছাড়ে। হাজার হাজার যাত্রীর আনাগোনা টার্মিনাসে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৭
Share:

নিরাপত্তার অভাব তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে। পড়ে রয়েছে মদের বোতলও। —নিজস্ব চিত্র।

একই দিনে তিনটি কেপমারির অভিযোগ উঠল তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে। এই টার্মিনাসে স্থানীয় এবং দুরপাল্লা মিলিয়ে প্রায় ৩০০ বাস প্রতিদিন টার্মিনাস থেকে ছাড়ে। হাজার হাজার যাত্রীর আনাগোনা টার্মিনাসে। সেখানেই এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন যাত্রীরা ও প্রশাসন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধের মধ্যে তিন যাত্রী টাকা ভর্তি ব্যাগ-মোবাইল খোওয়ান। কেপমারি নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে প্রধাননগর থানাতেও। গত ৩ ডিসেম্বর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিনই প্রধাননগর থানায় টার্মিনাসে চুরি-কেপমারির কোনও না কোনও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ টার্মিনাস এখন কেপমারি চক্রের মুক্তাঞ্চল বলে অভিযোগ। সহযাত্রী সেজে পাশে বসে গল্প করে ওঠার সময় মোবাইল-ব্যাগ চুরি করে পালাচ্ছে একদল যুবক। তাদের মধ্যে দু-একজন মহিলাও রয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। গত বৃহস্পতিবার চম্পাসারির বাসিন্দা এক যাত্রী প্রধাননগর থানায় মোবাইল চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। তার আগের দিন অর্থাৎ বুধবার কার্শিয়াঙের বাসিন্দা এক মহিলার ব্যাগ ছিনতাই হয়েছে বলে অভিযোগ। গত মঙ্গলবার দুষ্কৃতীদের শিকার হয়েছেন খালপাড়ার এক ব্যবসায়ী। বাস থেকে নামার পরে তাঁকে ঘিরে ধরে দামি মোবাইল নিয়ে পালায় কেপমারের দল।

সাগর পাল নামে চম্পাসারির এক বাসিন্দার গত বৃহস্পতিবার মোবাইল ছিনতাই হয়েছে টার্মিনাসে নামার পরেই। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাঁকে নজরে রেখেই ‘অপারেশন’ চালানো হয় বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি চক্রের শিকার হয়েছিলেন দার্জিলিঙের বাসিন্দা সঙ্গীতা ছেত্রী। সঙ্গীতা বলেন, ‘‘টার্মিনাসে বসে অপেক্ষা করছিলাম। বাসের নম্বর ঘোষণা হতেই উঠতে গিয়ে বুঝতে পারি আশেপাশে চার পাঁচজন প্রায় ঘিরে ফেলেছে। কিছু পরে বুঝতে পারি হাতে ধরে থাকা ব্যাগ কেটে নিয়ে চলে গিয়েছে ওরা।’’

Advertisement

টার্মিনাসে সাদা পোশাকের পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ির পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সদর) ইন্দ্র চক্রবর্তী। নিরাপত্তার জন্য রয়েছেন মাত্র ৪ জন বেসরকারি সংস্থার কর্মী। অভিযোগ, রাতের বেলায় মদের আসরও চলে অবাধে। সকালে চত্বর জুড়ে ছড়িয়ে থাকে মদের বোতল। যত্রতত্র পার্কিংয়েরও সমস্যা রয়েছে। নিরাপত্তার অভাব নিয়ে অনেক বার প্রশ্নের মুখে পড়েছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন যে হয়নি, তা এই ঘটনাগুলি থেকে বোঝা যায়। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরা বসানোর আলোচনা হয়েছে। তবে বাস টার্মিনাসটি ভেঙে আর্ন্তজাতিক মানের করা হবে। তখন নিরাপত্তাও বাড়বে।’’ যাত্রীদের প্রশ্ন, তত দিন তাঁদের কেপমারদের শিকার হতেই থাকবেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন