দিনভর অভুক্ত রোগী

জলপাইগুড়ির নয়া বস্তির বাসিন্দা বছর ষাটের শিবানী সাহানি গত শুক্রবার নিজের বাড়িতেই কুয়োর পাড়ে পড়ে ডান হাতে চোট পান৷ শনিবার তাঁকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর ছেলে হারাধন সাহানি৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

তিন ঘণ্টার জায়গায় ভুল করে চিকিৎসক লিখেছিলেন তিন দিন। আর তারই জেরে অস্ত্রোপচারের পর এক বৃদ্ধাকে দিনভর খেতে না দিয়েই রেখে দিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

রাতের দিকে ওই বৃদ্ধা নেতিয়ে পড়লে টনক নড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বিষয়টিতে কিছু গোলমাল হচ্ছে বুঝতে পেরে এগিয়ে আসেন আরেক চিকিৎসক। তখনই সেই ভুল সামনে আসে। তড়িঘড়ি খাবারের ব্যবস্থা করা হয় তাঁর। তাজ্জব করা এই ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে৷

জলপাইগুড়ির নয়া বস্তির বাসিন্দা বছর ষাটের শিবানী সাহানি গত শুক্রবার নিজের বাড়িতেই কুয়োর পাড়ে পড়ে ডান হাতে চোট পান৷ শনিবার তাঁকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর ছেলে হারাধন সাহানি৷ কিন্তু হাসপাতালের তরফে ভর্তি করতে বলা হলেও চিকিৎসক না থাকায় শিবানীদেবীকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন তিনি। সোমবার ফের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, বৃদ্ধার ডান হাতের কব্জির হাড় ভেঙে গিয়েছে৷ ভর্তি করতে হবে৷ মঙ্গলবার হাতের অস্ত্রোপচার হবে৷ বৃদ্ধার বাড়ির লোকেদের কথায়, সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃদ্ধাকে কিছু না খাওয়ানোরও পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা৷ মঙ্গলবার বেলা সোওয়া এগারোটা নাগাদ অস্ত্রোপচার হয়৷

Advertisement

হারাধনবাবু বলেন, ‘‘বেলা বারোটা নাগাদ মাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হয়৷ তিনটা-সাড়ে তিনটা নাগাদ হাসপাতালে গিয়ে নার্সদের কাছে মাকে কী খেতে দেব জানতে চাই। কিন্তু নার্সরা প্রেসক্রিপশন দেখে জানিয়ে দেন চিকিৎসক তিনদিন মাকে কিছু না খাওয়াতে বলেছেন৷’’ রাত আটটা পর্যন্ত এ ভাবেই চলতে থাকে৷ খাবার না পেয়ে ততক্ষণে কার্যত নেতিয়ে পড়েন শিবানীদেবী৷ শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের আরেক চিকিৎসকের উদ্যোগে হাসপাতালের কর্মীরা শিবানীদেবীর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন৷ তখন ওই চিকিৎসক হাসপাতাল কর্মীদের জানান, তিনি ভুল করেছেন৷ আসলে তিন ঘণ্টা না খেতে দেওয়ার কথা লিখতে চেয়েছিলেন৷ রাত প্রায় সাড়ে ন’টা নাগাদ বৃদ্ধাকে খাবার দেওয়া হয়। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ তাঁর বাড়ির লোকেরা৷

হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন