তথ্য গোপনের নালিশ

গাফিলতি, ক্ষুব্ধ হাসপাতাল কর্মীরাই

চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের তদন্ত করতে গেলে চিকিৎসক, নার্সদের একাংশ প্রকৃত তথ্য ধামাচাপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে সুপারের দফতরে গিয়ে সরব হলেন হাসপাতালের কর্মীরাই। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৩
Share:

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের তদন্ত করতে গেলে চিকিৎসক, নার্সদের একাংশ প্রকৃত তথ্য ধামাচাপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে সুপারের দফতরে গিয়ে সরব হলেন হাসপাতালের কর্মীরাই। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনা। সেখানে সুপার নির্মল বেরা এবং অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায়কে ঘেরাও করে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গড়ার দাবি তোলেন। অভিযুক্ত জুনিয়র চিকিৎসকের শাস্তির দাবি করতে থাকেন।

Advertisement

মৃত উমেষ মল্লিক হাসপাতালের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর ভাই। সোমবার হাসপাতালে তাঁর শরীর থেকে রক্ত নেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়ে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট চান সুপার। অভিযোগ, এ দিন সেই মতো তদন্ত কমিটি ওয়ার্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে নার্স, চিকিৎসকরা তাঁদের বলেন, রোগীর চিকিৎসা চলছিল, স্যালাইন লাগানো ছিল। পরিবারের অভিযোগ, কোনও রকম স্যালাইন ওই সময় লাগানো ছিল না। তদন্ত কমিটির লোকদের ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে এর পর সরব হন মৃতের আত্মীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তৈরি করতেও প্রভাব খাটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন অনেকে। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামলাতে জেলাশাসক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অনুরাগ শ্রীবাস্তব মহকুমাশাসককে হাসপাতালে পাঠান। মহকুমাশাসক পানিক্কর হরিশঙ্কর বলেন, ‘‘জেলাশাসকের নির্দেশ মতো চার জনের তদন্ত কমিটি গঠন হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং অন্য সরকারি হাসপাতালের দুই চিকিৎসক থাকবেন। সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে কমিটি রিপোর্ট দেবে।’’ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তৈরিতে প্রভাব খাটানো নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ফের তা করানোর প্রস্তাব দেন মহকুমাশাসক। তবে পরিবার না চাওয়ায় অভিযোগকারীরাও তা চাননি।

অভিযোগকারীদের সঙ্গে সুপারের দফতরে যান রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশন এবং কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতারাও। কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রশান্ত সরকার, কো-অর্ডিনেশনের নেতা উৎপল সরকাররা হাসপাতালের চিকিৎসক এবং কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলেন অধ্যক্ষ এবং সুপারের কাছে।

Advertisement

অভিযোগ করেন, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট থেকে লক্ষাধিক টাকার ওষুধ ‘অ্যালবুমিন’ চুরি হলেও তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে না। একমাস ধরে অস্ত্রোপচারের দিন পাচ্ছেন না রোগীরা। অথচ দালাল চক্রের মাধ্যমে গেলে রোগীদের আগে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। ওয়ার্ডের রোগীদের হুইল চেয়ারে করে অস্ত্রোপচারের ঘরে নিয়ে যেতে পাঁচশো টাকা চান হাসপাতালেরই কর্মী। কোন ডাক্তার ওয়ার্ডে চিকিৎসা করছেন তাঁর নাম জিজ্ঞাসা করলেও রোগীর লোকদের বলা হচ্ছে না। কল বুক দিলেও সিনিয়র চিকিৎসকেরা যান না। অথচ কর্মীদের দোষ হলে নানা অভিযোগ তোলা হয়। দায়িত্বে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের ভূমিকা নিয়েও তারা প্রশ্ন তোলেন। সুপার জানান, ওষুধ চুরির বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট নার্সদের লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন