স্যালাইনে কেন টাকা

একই অবস্থা হয়েছিল হাকিমপাড়ার বাসিন্দা সুশীল রায়ের। তাঁর কাছে টাকা চান ওয়ার্ডের কয়েকজন আয়া। শেষে টাকা দিলে তাঁর স্যালাইন লাগিয়ে দেওয়া হয়। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে স্যালাইন লাগাতে কেন টাকা দিতে হবে তাই বুঝে উঠতে পারছেন না রোগীরা।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৩
Share:

ভোগান্তি: শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে।— নিজস্ব চিত্র।

শনিবার গভীর রাতে জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন সন্তোষীনগরের বাসিন্দা ভোলা গুপ্ত। তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হবে জানিয়ে চ্যানেল লাগিয়ে দেওয়া হয় হাতে। অথচ রবিবার রাত আটটা পর্যন্ত তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হয়নি। করিডরে মেঝেতে শয্যায় রয়েছেন। অভিযোগ, দুই বার খোঁজ নিতে ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে নার্সরা ধমক দিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘দেখছেন না ব্যস্ত রয়েছি। কাজ সেরে আপনার স্যালাইন দেব।’’

Advertisement

একই অবস্থা হয়েছিল হাকিমপাড়ার বাসিন্দা সুশীল রায়ের। তাঁর কাছে টাকা চান ওয়ার্ডের কয়েকজন আয়া। শেষে টাকা দিলে তাঁর স্যালাইন লাগিয়ে দেওয়া হয়। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে স্যালাইন লাগাতে কেন টাকা দিতে হবে তাই বুঝে উঠতে পারছেন না রোগীরা। রোগীদের অনেকেই জানান, জ্বরে অসুস্থ রোগীদের শয্যা থেকে উঠে স্যালাইন লাগাতে নার্সদের কাছে যেতে হচ্ছে। তবে তারা স্যালাইন লাগিয়ে দিচ্ছেন। জ্বর, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হওয়ায় ক্ষুব্ধ রোগী ও পরিবারের লোকেরা।

সুশীলবাবুর অভিযোগ, ‘‘কিছুতেই স্যালাইন লাগিয়ে দিচ্ছিল না। আয়ারা আমাকে বলছিল, বিনে পয়সায় কিছু হয় দাদা। শেষে ১০০ টাকা দিতে হয়েছে।’’

Advertisement

ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রচুর রোগী প্রতিদিনই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন। পুরুষ এবং মহিলা মেডিসিন এবং আইডি বিভাগে সব মিলে দু’শোর মতো রোগী ভর্তি রয়েছেন। এখনও জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীদের মশারির ব্যবস্থা করতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।

চিকিৎসা পরিষেবার কী পরিস্থিতি তা বলতে গিয়ে অনেকেই চোখের জল ফেলছেন। হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘স্যালাইন লাগানো নিয়ে এ ধরনের অভিযোগ কেউ করেননি। তবে শুনেছি যখন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চম্পাসারির বাসিন্দা বাবলু যাদবদের মতো রোগীরা। তাঁর কথায়, ‘‘৩ দিন ভর্তি রাখার পর চিকিৎসক ২৪ অগস্ট ছুটি করে দেন। তখনও সুস্থ হইনি। প্লেটলেট ফের কমতে শুরু করায় শনিবার ফের ভর্তি হতে হয়েছে।’’ তাঁর মতো অনেকেই নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে চান না। তাই হাসপাতালের উপরেই তাঁকে ভরসা করতে হচ্ছে। অথচ এখানে সুষ্ঠু চিকিৎসা না হলে তাঁর মতো অনেকেই বিপাকে পড়বেন বলে হতাশ হন তিনি। জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে করিডরে নোংরার মধ্যেই রোগীদের থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রদীপ রায়, অঙ্গদ সিংহের মতো রোগীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন