গাফিলতিতে রোগীমৃত্যু, ভাঙচুর হাসপাতালে

ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল। জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৬ ০২:৩৯
Share:

মালদহ মেডিক্যালে হামলার চিহ্ন। —নিজস্ব চিত্র।

ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল। জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।

Advertisement

ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনাস্থলে আসে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। পুলিশের সামনেই ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হয় সাংবাদিকদের। এক চিত্র সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁকে বেধরক মারধর করে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় উৎপল মণ্ডল নামে ওই চিত্র সাংবাদিককে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদীর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুলিশ ও মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ ইংরেজবাজার থানার সাট্টারির গীতা মোড়ের বাসিন্দা আকতারুল শেখকে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁদের দাবি, জ্বর ও বমির জন্যই হাসপাতালে আনা হয়েছিল আকতারুলকে। তবে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বিষক্রিয়ায় অসুস্থ বলে তাঁর চিকিৎসা শুরু করে দেন। এরপরে ওই রোগীকে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। ইঞ্জেকশন দেওয়ার ১৫ মিনিট পরেই বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ মৃ্ত্যু হয় আকতারুল শেখের।

Advertisement

এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর আত্মীয়রা। প্রথমে নার্সদের কেবিনের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা জুনিয়ার ডাক্তারদের তারা ধাক্কাধাক্কি করে বলে অভিযোগ। তারপরেই জুনিয়ার ডাক্তাররা দল বেধে গিয়ে রোগীর আত্মীয়দের উপরে হামলা চালায়। বাঁশ, লাঠি নিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে যায় দু’পক্ষ। ঘটনাস্থলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গেলে তাদের সামনেও চলে হাতাহাতি। ঘটনায় ছবি তুলতে যান বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের চার সাংবাদিক। অভিযোগ, তাঁদের উপরে চড়াও হন জুনিয়ার ডাক্তাররা।

স্থানীয় একটি কেবল চ্যানেলের চিত্র সাংবাদিক উৎপল মন্ডলের আঘাত গুরুতর। তাঁর মুখে এবং হাতে আঘাত রয়েছে। তাঁকে মারধর দিয়ে ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে ওই সাংবাদিককে। মেডিক্যাল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উৎপলকে ভর্তি করা হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। আর বাকি তিন সাংবাদিককে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। ইংরেজবাজার থানায় জুনিয়ার ডাক্তারদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই সাংবাদিকরা। এ ব্যাপারে জুনিয়ার ডাক্তারদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মেডিক্যাল কলেজের সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল হাসপাতালে। পুলিশকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে। সাংবাদিকদের মারধরের বিষয়টিও খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন