জলেই ছিল সংক্রমণ, জানিয়ে দিল রিপোর্ট

পাড়ার অনুষ্ঠানে মাংস-ভাত খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রায় পঞ্চাশজন। সেই ঘটনায় পরে দু’জন মারাও যান। গত ২৫ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বাউদিয়া পাড়ার ঘটনা। সেই ঘটনার তদন্ত করতে কমিটি গড়েছিল স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

পাড়ার অনুষ্ঠানে মাংস-ভাত খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রায় পঞ্চাশজন। সেই ঘটনায় পরে দু’জন মারাও যান। গত ২৫ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বাউদিয়া পাড়ার ঘটনা। সেই ঘটনার তদন্ত করতে কমিটি গড়েছিল স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

সে সময় খাদ্যের নানা নমুনা পরীক্ষা করতে কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট স্বাস্থ্য দফতরের হাতে এসেছে মঙ্গলবার। তা দেখেই চোখ কপালে উঠেছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে জলে মাত্রাতিরিক্ত কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়া পাওয়া গিয়েছে। সেইসঙ্গে অনান্য বিষাক্ত রাসায়নিকও মিলেছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান কোনওভাবে জলে কীটনাশক মিশেই জল বিষাক্ত হয়ে যায়।

নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে রান্না করা মাংস এবং ভাতকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। জলের দু’টি নমুনা পাঠানো হয়। দু’টিতেই সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে। ওই ঘটনার পরেই পড়শিরা দাবি করেছিলেন যেই বালতিতে কীটনাশক মিশিয়ে খেতে ছড়ানো হয়। রান্নার কাজের জন্যও সেই বালতি ব্যবহার করা হয়েছিল। ওই বালতিতেই জল ভরে অতিথিদের গ্লাসে করে দেওয়া হয় বলে দাবি। অনেকের জল খেতে তিতকুটে লেগেছিল বলেও দাবি করেছিলেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট প্রাথমিক ভাবে সেই সম্ভাবনায় সিলমোহর দিল বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

জলপাইগুড়ি জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (২) দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘রান্না করা মাংস, ভাত, চাল এবং জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছিল। রিপোর্টে প্রচুর পরিমাণে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া এবং সালমোনেল্লার অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে।’’ জল থেকেই যে এই বিষক্রিয়া ঘটেছিল সেই বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতর প্রায় নিশ্চিত বলে দাবি করেছে।

সূত্রের খবর, প্রায় দু’বছর আগে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জন্ডিস রোগের প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। সেই সময়েও স্বাস্থ্য দফতর থেকে জলদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছিল বলে জানান এক স্বাস্থ্য কর্তা। বিস্তীর্ণ ওই গ্রামীন অঞ্চলে তিস্তার সেচ নালা রয়েছে। ওই সেচ নালার জল প্রায়ই উপচে পড়ে। গ্রামবাসীদের একাংশ ওই নালার ধারেই প্রাতঃকৃত্য সারেন বলেও অভিযোগ। ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে নলকূপের জলই একমাত্র পানীয় জল। কিন্তু নলকূপের পাড়গুলোরও বেহাল দশা। অভিযোগ এই কারণে ফলে সেচ নালার দূষিত জল অবাধে মিশছে নলকূপের জলে। এই জল থেকেও নানা ধরণের রোগ ছড়াচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান।

সূত্রের খবর, শীঘ্রই স্বাস্থ্য দফতর এই রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠাবে। জলপাইগুড়ি জেলা জনস্বার্থ কারিগরি দফতরের কাছেও রিপোর্ট পাঠানো হবে বলে জানান স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন