সাবধানতা: চিতাবাঘের ভয়ে গাড়িতে করে সাফারি পার্ক ঘোরানো হল পর্যটকদের। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
দেশ-বিদেশে জঙ্গল সাফারির ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় অহরহ দেখা যায়। তার কোথাও দেখা যায়, সামনে থেকে গাড়ি বেয়ে উঠছে সিংহ। কোথাও বাঘেরা এসে ধাক্কা দিচ্ছে গাড়ির জানলায়।
‘‘এ সব খুব দেখি, জানেন! তাই যখনই শুনলাম সচিনের ভয়ে গাড়িতে চাপিয়ে ঘোরাবে, ঝটপট তৈরি হয়ে নিলাম। আজ ঘুরতেই হবে সাফারিতে,’’ বলেন নির্ঝর রায়। তাঁর কথায় যে আশপাশের অন্যরাও একমত, চেঁচিয়ে জানিয়ে দিলেন তাঁরা। খাঁচায় নয়, খোলা এলাকায় চিতাবাঘ দেখব— দর্শকদের শুধু এই আকাঙ্ক্ষায় বুধবার ভরে গেল বেঙ্গল সাফারি পার্ক। পার্ক কর্তৃপক্ষের মতে, এ দিন হাজারখানেক দর্শক তো এসেছেনই।
মঙ্গলবার টিকিটের টাকা ফেরত দিয়ে তাঁরা যে মাথা চাপড়াচ্ছিলেন, বুধবার ছুটির দিন সত্ত্বেও তা অনেকটাই পুষিয়ে গেল, বলছেন তাঁরা।
মালদহ থেকে এসেছিলেন শৈবাল কর এবং তাঁর পরিবার। তিনি বলেন, ‘‘একটু ঝুঁকি নিয়েই চলে এলাম। যদি বাসে ঘোরার সময়ে চিতাবাঘটিকে দেখা যায়!’’ জিম করবেটের গল্পের মতোই গা ছমছমে পরিবেশে এ দিন ঘুরেছে সাফারি পার্কের বাসটি। ভিতরে দর্শকদের কৌতূহলী চোখ সমানে চারদিকে ঘুরছে, দেখা গেল চিতাবাঘ? জঙ্গলের কোন ফাঁক দিয়ে যে সচিন বার হয়ে আসবে, তাই নিয়ে সারাটা পথ জল্পনা।
তবে দিনের শেষে সকলকে হতাশ করেছে সচিন। কোথাও তার লেজের ডগাও দেখা যায়নি। সাফারি শেষ করে জলপাইগুড়ির প্রিয়া সরকার যেমন কিছুটা হতাশ গলাতেই বললেন, ‘‘বাসে ঘুরেই চিতাবাঘটাকে দেখতে পেলাম না। আর বেশি তো ঘোরায়ওনি। এত কম সময়ে কি দেখা যায় কিছু!’’
বেঙ্গল সাফারি পার্কের সহকারী অধিকর্তা অসীম চাকি বলেন, ‘‘সাধারণ দর্শকরা এমন পরিস্থিতির পরেও সাড়া দিয়েছে। তাঁরা না এলে হয়তো আমরা সাফারি চালাতেই পারতাম না।’’
পার্ক কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, কুনকি হাতি দিয়ে পার্কের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাই গোটা পার্কে বাস ঘোরানো কিছুটা অসুবিধাজনক ছিল। তবে বাস সাফারি নতুন উৎসাহ তৈরি করেছে। যত দিন না সচিন ধরা পড়ছে, তত দিন দর্শনার্থীদের পায়ে হেঁটে ঘোরানো যে সম্ভব নয়, সেটাও তাঁরা আরও এক বার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন।