প্রচার গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ ‘নির্মল’ গ্রামবাসীর

বছর খানেক আগেই ‘নির্মল গ্রাম’ ঘোষণা হয়েছে। অথচ রোজ কাকভোরে কুয়াশা ঢাকা মাঠে প্রাতঃকৃত্যে যাচ্ছেন বাসিন্দারা এবং রোজই তর্ক-ঝামেলায় জড়াতে হচ্ছে স্থানীয় নজরদারি দলের সঙ্গে। কিন্তু তাঁরা তো নিরুপায়। অভিযোগ, টাকা জমা করেও তাঁরা সরকারি শৌচালয় পাননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৭
Share:

বছর খানেক আগেই ‘নির্মল গ্রাম’ ঘোষণা হয়েছে। অথচ রোজ কাকভোরে কুয়াশা ঢাকা মাঠে প্রাতঃকৃত্যে যাচ্ছেন বাসিন্দারা এবং রোজই তর্ক-ঝামেলায় জড়াতে হচ্ছে স্থানীয় নজরদারি দলের সঙ্গে। কিন্তু তাঁরা তো নিরুপায়। অভিযোগ, টাকা জমা করেও তাঁরা সরকারি শৌচালয় পাননি। দিনের পর দিন এই হেনস্থায় বিরক্ত তাঁরা শনিবার শৌচালয় ব্যবহার নিয়ে সরকারি প্রচার গাড়ি আটকে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন। গাড়ি থেকে চালককে নামিয়ে ধাক্কাধাক্কিও করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের কামারপাড়া সংসদে এ দিন বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতে টাকা জমা দেওয়া সত্ত্বেও তাঁরা ভর্তুকির সুলভ শৌচাগার পাননি। বাধ্য হয়ে তাঁদের খোলা মাঠ ব্যবহার করতে হচ্ছে। তা নিয়ে তাঁরা নিত্য হেনস্থা হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে এ দিন দুপুরে সুলভ শৌচাগার ব্যবহার নিয়ে সরকারি সচেতনতা প্রচারের গাড়ি দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই পরিবারের সদস্যরা।

শেফালি হেমব্রম, কবিতা ওরাওঁদের অভিযোগ, এক বছর আগে তাঁদের পাড়ার প্রত্যেকে পাকা শৌচাগার তৈরি বাবদ নিজেদের অংশের টাকা পঞ্চায়েতে জমা দিয়েছেন। অথচ তাঁদের বাড়িতে শৌচাগার তৈরি না করেই গোটা সংসদ এলাকাকে ‘নির্মল গ্রাম’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে বিপদ বেড়েছে। ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার রেজাল্ট থেকে সরকারি সুবিধা পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মেয়ে-বউদের নিয়ে তাঁরা কেউ খোলা মাঠে যেতে চান না বলে দাবি করে সুনীল মুর্মু, বিজয় হাঁসদারা বলেন, ‘‘নিত্য নজরদার দলের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছে। তার উপরে পাকা পায়খানার ব্যবহার নিয়ে গ্রামে প্রচার গাড়ি পাঠানোর মানে কী?’’

Advertisement

শেষ পর্যন্ত এলাকায় পুলিশ গেলে পরস্থিতি শান্ত হয়। বছর খানেক আগেই গোটা সংসদ এলাকা ‘নির্মল গ্রাম’ বলে সরকারি ভাবে ঘোষিত হয়েছে বলে স্বীকার করে এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শীতল সরকার দাবি করেন, ‘‘ব্লক কর্মীরা ঘরে বসে সমীক্ষা করে রিপোর্ট দেওয়ায় ওই সমস্যা হয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, কামারপাড়া সংসদের আদিবাসীপাড়া ২৪টি পরিবারের কারও সুলভ শৌচাগার হয়নি। মাঠেঘাটেই ওই পরিবারগুলির সব সদস্য প্রাতঃকৃত্য সারতে বাধ্য হচ্ছেন। তা নিয়ে রোজ নজরদারি দলের সঙ্গে তাঁদের ঝগড়া হচ্ছে বলে শুনেছি। বিষয়টি ব্লক কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে। বালুরঘাটের বিডিও সুস্মিতা সু্ব্বা বলেন, ‘‘বেস-লাইন সমীক্ষার তালিকায় ওই আদিবাসীপাড়ার বাসিন্দাদের নাম থাকলে তাঁদের প্রত্যেকের বাড়িতে পাকা শৌচালয় হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন