তলিয়ে যাওয়া ঘর খুঁজতে গঙ্গাপারে

শুধু তিনিই নন, ভিটেমাটি হারানো অনেকেই এ দিন গঙ্গা পাড়ে গিয়ে নিজেদের বসতভিটের স্মৃতিচিহ্ন খোঁজার চেষ্টা করেছেন। অনেকেই এক বছরেও পুনর্বাসন না পাওয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তবে, ভেঙে যাওয়া অংশে ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ বালির বস্তা ফেলে প্রোকোপাইন পদ্ধতিতে গঙ্গাকে রোখার চেষ্টা করায় এ বার এখনও জল ঢোকেনি।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

বীরনগর  শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৮
Share:

সন্ধান: অবশিষ্ট ভিটেয় স্বাধীন সরকার। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

এক বছর আগে এই দিনটিতেই গঙ্গা গ্রাস করেছিল তাঁর পৈতৃক বাড়ি। আশ্রয় নিতে হয়েছিল চামাগ্রামে এক বন্ধুর বাড়িতে। সেখানেই এক বছর কাটিয়ে ফেললেন তিনি। ভাঙনের এক বছর পর শনিবার বীরনগরের গঙ্গা পাড়ে কিছুটা মাত্র অংশ টিকে থাকা সেই ভিটেতে গিয়ে স্মৃতিতে ডুবলেন বৈষ্ণবনগরের বিজেপি বিধায়ক স্বাধীন সরকার।

Advertisement

শুধু তিনিই নন, ভিটেমাটি হারানো অনেকেই এ দিন গঙ্গা পাড়ে গিয়ে নিজেদের বসতভিটের স্মৃতিচিহ্ন খোঁজার চেষ্টা করেছেন। অনেকেই এক বছরেও পুনর্বাসন না পাওয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তবে, ভেঙে যাওয়া অংশে ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ বালির বস্তা ফেলে প্রোকোপাইন পদ্ধতিতে গঙ্গাকে রোখার চেষ্টা করায় এ বার এখনও জল ঢোকেনি।

গত বছর ২৯ জুলাই কালিয়াচক ৩ ব্লকের বীরনগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সরকারটোলায় প্রায় ৫০০ মিটার মার্জিনাল বাঁধ গঙ্গার জলের তোড়ে ভেঙে পড়ে। ওই ব্যাপক ভাঙনের জেরে সরকারটোলা, চিনাবাজার, মুকুন্দটোলা, মুচিপাড়া গ্রামের প্রায় দেড়শো ঘর বাড়ি তলিয়ে যায় গঙ্গায়। এর মধ্যে ছিল সরকারটোলা গ্রামে থাকা এলাকার বিধায়ক স্বাধীন সরকারের পৈতৃক বাড়িও। তাঁর বাড়ির পেছন দিকের অংশ পুরোটাই গঙ্গায় চলে যায়। দোতলা বাড়ির যে অংশটুকু বাকি ছিল আতঙ্কে তাও ভেঙে দেন বিধায়ক। এখন একটি ঘরের কিছু অংশ সেখানে টিকে রয়েছে।

Advertisement

ঠিক এক বছর পর এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ সেই ভিটেয় যান স্বাধীনবাবু। ঘুরে দেখেন ভেঙে পড়া অংশ। তিনি বলেন, ‘‘গত এক বছরে অনেকবারই এখানে এসেছি। কিন্তু আজকের ব্যাপারটা আলাদা। ছোটবেলার কথা যত মনে পড়ছে ততই মন ভারাক্রান্ত হচ্ছে। তবে আশার আলো, ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোখার কাজ শুরু করেছে।’’ বিধায়কের মতো ভিটেমাটি হারানো সঞ্জয় মণ্ডল, আনন্দ মণ্ডল, ফুরকুনি মণ্ডলরা এ দিন গঙ্গা পাড়ে ছুটে গিয়েছেন হারানো ঘরের স্মৃতি হাতড়াতে। ভিটে হারিয়ে এক বছর ধরে এলাকারই বীরনগর হাইস্কুলের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন প্রায় ষাটটি পরিবার। তাঁদের মধ্যে রাম মণ্ডল, শংকর মণ্ডলদের প্রশ্ন, ‘‘এক বছর পরিবার নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। আমরা কি পুনর্বাসন পাব না?’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবতোষ মণ্ডল জানান, যে জমি ছিল তাতে ৮৬টি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। বাকিদের জন্য জমির খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন