বাংলাদেশের স্টলে ভরেছে মেলা চত্বর

কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলায় পরপর সাজানো ওই সম্ভার দেখে ক্রেতাদের অনেকেও বলছেন, কিছু ক্ষণের জন্য মনে হচ্ছে যেন বাংলাদেশে রয়েছি। এমন অনুভূতি, সুযোগ উত্তরের অন্য কোনও মেলায় আগে আগে হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০৭:৩০
Share:

পসরা: রাসমেলায় ওপার বাংলার স্টল। নিজস্ব চিত্র

এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। মাঠের এক দিক জুড়ে ওপার বাংলার স্টল থেকে ব্যানারের ছড়াছড়ি। কোথাও ক্রেতা টানছে রঙ বেরঙের বাহারি ঢাকাই জামদানি থেকে মসলিন, রাজশাহি সিল্ক বা টাঙাইলের তাঁত। কোথাও আবার ভিড় পদ্মার নোনা ইলিশ থেকে ফরিদপুরের খেজুরগুড়ের। কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলায় পরপর সাজানো ওই সম্ভার দেখে ক্রেতাদের অনেকেও বলছেন, কিছু ক্ষণের জন্য মনে হচ্ছে যেন বাংলাদেশে রয়েছি। এমন অনুভূতি, সুযোগ উত্তরের অন্য কোনও মেলায় আগে আগে হয়নি।

Advertisement

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ওই উপস্থিতিতে খুশি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “ঢাকাই জামদানি, পদ্মার নোনা ইলিশ সহ নানা সামগ্রী নিয়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আসায় রাসমেলার শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে। ওই ব্যবসায়ীদের যাতে অসুবিধে না হয় পুরসভাকে তা দেখতে বলেছি।” মন্ত্রী জানান, কাশ্মীরের শাল সহ রাজ্যের বিখ্যাত সব পসরা নিয়েও ব্যবসায়ীরা এসেছেন। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ বলেন, “বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। ২০টির বেশি স্টল হয়েছে।”

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের স্টলে কোন সামগ্রীর বাজার দর কেমন? নোয়াখালির বাসিন্দা বাবলু নাগ জানিয়েছেন, তাদের স্টলে বিভিন্ন শাড়ির মধ্যে ঢাকাই জামদানি ২৫০০-১২০০০ টাকা, রাজশাহি সিল্ক ১৪০০-১৮০০ টাকা, টাঙাইল তাঁত ৬০০-১০০০ টাকা, ঢাকাই মসলিন ১২০০-৫০০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। তার সংযোজন, “রাসমেলায় এ বারই প্রথম এসেছি। এপার বাংলায় আমার দেখা সেরা রাসমেলাই।”

Advertisement

নারায়ণগঞ্জের রফিকুল ইসলাম বলেন, “২০০৫ সাল থেকে টানা রাসমেলায় পসরা নিয়ে আসছি। ওই সব শাড়ি আমাদের স্টলেও রয়েছে। দামও মোটামুটি একই রকম। ঢাকাই কোটা ১৫০০-৪০০০ টাকা, লুঙ্গি ৩০০-৯০০ টাকায় রাসমেলায় বিক্রি করা হচ্ছে।” টাঙাইলের প্রবীর সরকার বলেন, “গত বারের চেয়ে আমাদের স্টল বেড়েছে। লাগছে। এ বার শুধু রাসমেলাটা পুরোপুরি জমে ওঠে ভাল ব্যবসার অপেক্ষা।”

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, খেজুর গুড় ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নোনা ইলিশ প্যাকেট বন্দি করে বিক্রি হচ্ছে। প্রায় ৬০০ গ্রাম ওজনের একটির দাম ৫০০ টাকার বেশি। স্কুল শিক্ষিকা জবা পাল, অঞ্জনা বিশ্বাসরা বলেন, “ঢাকাই জামদানি কেনার বহু দিনের শখ। এপার বাংলায় বসে ওপার বাংলার বিখ্যাত ওই শাড়ি কেনার সুযোগটা বড় প্রাপ্তি। মেলা জমে উঠলে কিনতে যাব।”

উদ্যোক্তারা জানান, ৩ নভেম্বর মেলা শুরু হয়েছে। চলবে ১৯ তারিখ পর্যন্ত। শুরুতে মেলার জমতে দেরি হওয়ায় মেয়াদ আরও কয়েক দিন বাড়ানো হতে পারে। কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সম্পাদক রাজেন বৈদ জানান, ফি বছর রাসমেলায় গড়ে ৪০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। ‘আন্তর্জাতিক’ ছোঁয়া পাওয়া রাসমেলায় এ বারে ব্যবসা বাড়বে বলে আশা করি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন