অস্ত্র উদ্ধারে কেন আঁধারে পুলিশ

জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল অবশ্য বলেন, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। গতরাতেও বেশ কয়েকজন ধরা পড়েছে।’’ কিন্তু পুলিশের এই বক্তব্যেও স্বস্তিতে নেই স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার দাসপাড়ায় বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুলি এবং ধারাল অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন মহম্মদ খইরুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চোপড়া: শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৮ ০৩:০১
Share:

চোপড়ার দাসপাড়ায় মৃত খইরুলের শেষকৃত্যে তার পরিজনেরা (ভিডিও দেখুন অ্যাপে)। নিজস্ব চিত্র

গোলমাল হলেই চোপড়া ও লাগোয়া এলাকায় দেদার গুলি চলে। বোমাও পড়ে। সবই পুলিশের সামনেই। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। তবুও বোমা-পিস্তল উদ্ধার করতে পুলিশ না পারায় এলাকায় ক্ষোভ-আতঙ্ক বাড়ছে।

Advertisement

জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল অবশ্য বলেন, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। গতরাতেও বেশ কয়েকজন ধরা পড়েছে।’’ কিন্তু পুলিশের এই বক্তব্যেও স্বস্তিতে নেই স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার দাসপাড়ায় বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুলি এবং ধারাল অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন মহম্মদ খইরুল। বুধবার রাতে তাঁর দেহ গ্রামে পৌঁছায়। বৃহস্পতিবার তাঁর শেষকৃত্যে তৃণমূলের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। মোতায়েন ছিল প্রচুর পুলিশও। সেখানে পুলিশের সামনেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, পুলিশের একাংশের নিষ্ক্রিয়তার জন্যই এমন আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছে দুষ্কৃতীরা।

দাসপাড়া বাজারেও সেই ভয়ের ছবি রয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, ফের গন্ডগোল, বোমা-গুলির আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, সামনে চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনও রয়েছে। তা নিয়েও যে কোনও সময় গোলমাল বাধতে পারে বলে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের আশঙ্কা। পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম মহম্মদ রমজান এবং নুর আলম। তাদের তিনদিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সব মিলিয়ে দাসপাড়া গোলমালে ১০ জন গ্রেফতার হলেও এখনও কোনও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের সেই একই বক্তব্য, লাগাতার তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

Advertisement

চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদূল রহমানও বলেন, ‘‘প্রতিটি পঞ্চায়েত আমরা জিতেছি। অথচ বিরোধীরা গন্ডগোল করছে। পুলিশ ঠেকাতে পারছে না। পুলিশ শক্ত হাতে নিলে আমাদের কর্মী খুন হতেন না।’’

ইসলামপুর ও চোপড়া এলাকাতেই গত শনিবার থেকে বোমা-গুলির আঘাতে দু’জনের মৃত্যু হয়। ইসলামপুরের পণ্ডিতপোতা-১ বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় লাল মহম্মদ নামে এক নির্দল সমর্থকের। পরের দিন পণ্ডিতপোতা-২ তে বোমাবাজি, গুলি চলে। আহত হয়েছেন অনেকে। পুলিশের সামনেই যথেচ্ছ বোমা-গুলি চলে। লক্ষ্মীপুরে পুলিশের ও বিরোধীদের মধ্যেই দফায় দফায় গন্ডগোলে বোমাবাজি, গুলিও চলে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকেও রাবার বুলেট ছুড়তে হয়। সোমবার বোর্ড গঠন ঘিরে দিনভর সংঘর্ষ চলে লক্ষ্মীপুরে। মঙ্গলবার দাসপাড়ার বোর্ড গঠন ঘিরে ফের বোমাবাজি, গুলি চলে। গোলমালের সময় অনেকের হাতেই পিস্তল দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। অথচ উদ্ধার হয়েছে মাত্র দু’টি পিস্তল ও ছ’টি কার্তুজ। বাকি অস্ত্রের খোঁজ নেই।

সিপিএম এর উত্তর দিনাজপুরের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালের কথায়, ‘‘এলাকায় শাসক দলের হাতেই প্রচুর অস্ত্র রয়েছে। তাই গন্ডগোল হচ্ছে, লোক মারা যাচ্ছে। আমরা বারবারই অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন