রেবা কুণ্ডু
মোবাইল বন্ধ। বাড়িতেও নেই তাঁরা। গত তিন দিন ধরে হন্যে হয়ে শাসকদলের এই দুই নেতা নেত্রীর খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। কোথায় থাকতে পারেন কোচবিহার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন রেবা কুণ্ডু ও তাঁর ছেলে কাউন্সিলর শুভজিৎ, তা নিয়ে জল্পনা চলছে গোটা শহর জুড়েও।
দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত মা ও ছেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। জেলার এসপি ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, ‘‘ওই দু’জনেরই খোঁজ চলছে।’’ ভিন্ রাজ্যেও তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে।
কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডুর স্ত্রী রেবাদেবী। স্বামীর মৃত্যুর পরে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি ভোটে জিতে চেয়ারপার্সন হন তিনি। ২০১৬-র শেষের দিকে কোচবিহারের ব্যবসায়ী সম্রাট কুণ্ডু পুরসভার বিরুদ্ধে প্রায় ২ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন। ওই ঘটনাতেই রেবাদেবী, শুভজিৎ এবং পুরসভার এক আধিকারিক সহ ৪ জনের নামে মামলা হয়।
দুর্নীতির মামলায় নাম জড়ানোয় ২০১৭ সালের ৫ জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পদত্যাগ করেন রেবাদেবী। ওই দুর্নীতির মামলায় ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন ইঞ্জিনিয়ার সহ পুরসভার সাত কর্মীকে গ্রেফতার করে। তার পরেই মা-ছেলে গা ঢাকা দেন বলে পুলিশের অভিযোগ।
এর আগেই অবশ্য ওই দু’জন দাবি করেন, তাঁরা নির্দোষ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে।’’ কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহের বক্তব্য, ‘‘কেউ পলাতক কি না বলতে পারব না।’’
বিরোধীদের অভিযোগ, দল ও প্রশাসনের একটি অংশই তাঁদের আশ্রয় দিচ্ছে। তাই তাঁদের খোঁজ পাচ্ছে না পুলিশ। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “পুরসভায় কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। খুব সামান্যই প্রকাশ্যে এসেছে। এখন চোর-পুলিশ খেলা চলছে। শাসক দলের একটি অংশই ওই দু’জনকে আড়ালের চেষ্টা করছে।”