প্রতিবাদ: তুষার বর্মণ খুনের প্রতিবাদে আলিপুরদুয়ার শহরে মোমবাতি মিছিল। রবিবার রাতে। ছবি: নারায়ণ দে
গত কয়েক মাসে রিভলবার হাতে ভয় দেখানো বা মারধরের একাধিক অভিযোগ পেয়েও তৃণমূল কর্মী খুনে মূল অভিযুক্ত দলেরই উপপ্রধান শম্ভু রায়ের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ? তপসিখাতার ঘটনার পর এই প্রশ্ন তুলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এ বার সরব হলেন নিহত তুষার বর্মণের পরিবারের সদস্যরা৷ তাঁদের অভিযোগ, মাথার উপর শাসকদলের নেতৃত্বের হাত থাকার জন্যই পুলিশ তাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করেনি৷ অভিযোগ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ৷ অভিযোগ মানেনি শাসক দলও৷
তুষার খুনে পরোরপাড় পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সোনা রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ কিন্তু, মূল অভিযুক্ত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শম্ভু রায় এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন পরিজনেরা। পুলিশ কর্তাদের একাংশের দাবি, শম্ভুর খোঁজেও চলছে জোর তল্লাশি৷
কিন্তু তুষারের পরিজনদের প্রশ্ন, শম্ভুর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এর আগেও তো একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে! তাঁদের দাবি, পুলিশ যদি আগের অভিযোগগুলির ভিত্তিতে শম্ভুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত, তাহলে হয়তো এমন ঘটনা ঘটানোর সাহসই পেত না তারা৷
স্থানীয় সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বর মাসে এলাকার একটি বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে শম্ভু রায়, সোনা রায়দের বিরুদ্ধে৷ ২২ জানুয়ারি তুষার খুন হন৷ তার ন’দিন আগে তপসিখাতারই এক বধূ পুলিশের কাছে শম্ভুর বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীকে মারধর ও রিভলবার ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন৷ তাঁর স্বামীর অভিযোগ, “ঘটনার পর শুধু একবার তদন্ত করতে এসেছিল পুলিশ৷ কিন্তু শম্ভুকে ধরেনি৷” স্থানীয় বিজেপির এক নেতার অভিযোগ, এ ছাড়াও শম্ভুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পুলিশ গ্রহণই করেনি৷
তুষারের জেঠামশাই অরুণচন্দ্র বর্মণের অভিযোগ, “পুলিশ যদি আগে শম্ভুকে গ্রেফতার করত, তাহলে হয়তো ভাইপোকে প্রাণ দিতে হত না৷ আসলে তৃণমূল নেতাদের হাত মাথায় থাকার জন্যই হয়তো পুলিশ শম্ভুর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি৷”
যদিও অভিযোগ নিয়ে আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদবের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি৷ তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার ১ ব্লক সভাপতি মনোরঞ্জন দে-র দাবি, “শম্ভুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তাকে ধরতে তল্লাশিতে আমরাই পুলিশকে সাহায্য করেছি৷” দলের এক নেতার দাবি, আগের সব অভিযোগেই জামিন নিয়ে রেখেছে শম্ভু৷