Robbery in Siliguri

ভিন্‌রাজ্য থেকে শিলিগুড়িতে ঢুকে ‘দুঃসাহসিক’ ডাকাতি! ছক কষা হয় ভাড়াবাড়িতে বসে, জানাল পুলিশ

রবিবার ছুটির দিনের দুপুরে সুনসানই থাকে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোড। তারই সুযোগ নিয়ে শহরের নামী গয়নার দোকানে ঢুকেছিল ছয় থেকে সাত জনের একটি ডাকাতদল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫ ১৮:৪৩
Share:

ধৃত দু’জনকে সোমবার আদালতে হাজির করানো হয়। —নিজস্ব চিত্র।

দিনেদুপুরে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও আতঙ্কে শিলিগুড়ি শহরবাসী। শহরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। রবিবার দুপুরে ধৃত দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। কিন্তু টানা তল্লাশি চালিয়েও ডাকাতদলটির আর কোনও সদস্যের হদিস পায়নি শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ। ডাকাতদের ধরতে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বিশেষ দল পাড়ি দিয়েছে ভিন্‌রাজ্যে।

Advertisement

রবিবার ছুটির দিনের দুপুরে সুনসানই থাকে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোড। তারই সুযোগ নিয়ে শহরের নামী গয়নার দোকানে ঢুকেছিল ছয় থেকে সাত জনের একটি ডাকাতদল। নিরাপত্তারক্ষী থেকে কর্মীদের মারধর করে প্রায় ২৬ কেজির সোনা এবং হিরের গয়না লুট হয় বলে অভিযোগ। ওই সময় ট্র্যাফিক পুলিশের দুই কর্মী দু’জনকে আটকাতে সক্ষম হন। কিন্তু দলের বাকিদের খোঁজ মেলেনি।

পুলিশ জানিয়েছে, ট্র্যাফিক পুলিশে কর্মরত এএসআই দিলীপ সরকার এবং শিলিগুড়ি থানায় কর্মরত এএসআই রবিন লামার সাহসিকতায় মহম্মদ সফিক এবং মহম্মদ সামসেদ নামে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা গিয়েছে। ধৃত সফিক রাজস্থানের বাসিন্দা। সামসেদের বাড়ি বিহারে। দু’জনের কাছ থেকে তিনটি বন্দুক এবং ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। তা ছাড়াও সামান্য কিছু স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বিধাননগরে আস্তানা গেড়েছিল ওই ডাকাতদলটি। তা ছাড়া, বাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল ‘বুঝেশুনে।’ কারণ, যে বাড়িটি ভাড়া করা হয়, তার মালিক বয়স্ক। প্রথমে তিন থেকে চার জন নিজেদের শ্রমিক বলে পরিচয় দিয়ে ওই বাড়িতে ওঠেন। সকলেই বিহারের বাসিন্দা বলে জানান। চলতি মাসের নয় তারিখ ওই বাড়িটিতে ওঠেন চার জন। ধীরে ধীরে ভাড়াবাড়িতে সদস্য বাড়তে থাকে। একটি ঘরের বদলে দু’টি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় ১১ জন শ্রমিকের পরিচয় দিয়ে বিধাননগর এলাকায় বাড়িতে উঠেছিলেন। এত জন লোক বাড়িতে আসায় বাড়ির মালিক আপত্তি জানান। তাঁদের অন্যত্র বাড়ি দেখতে বলেন। সে নিয়ে দু’পক্ষের বচসাও হয়। তার পর রবিবার অন্যত্র উঠে যাচ্ছেন বলে ব্যাগপত্র নিয়ে ভাড়াবাড়ি থেকে বার হন আট-ন’জন। তার পরেই ওই ডাকাতির ঘটনা। তদন্তকারীরা মনে করছেন, গত ৯ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত শহরের সর্বত্র রেইকি করা হয়। তা ছাড়া পুরুষদের পাশাপাশি কয়েক জন মহিলাও ওই বাড়িতে ছিলেন। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের সকলের নাম-ঠিকানা জানার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে পুলিশের একটি দল ভিন্‌রাজ্যে গিয়েছে। শহরের বুকেও চলছে তল্লাশি।

সোমবার ধৃত দু’জনকে শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক তাঁদের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। সব বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সকলকেই ধরা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement