নির্যাতিতা ছাত্রীর প্রেমিকের খোঁজ পুলিশের

নবম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্তে নেমে তার ‘প্রেমিকের’ খোঁজ করছে পুলিশ। সেই সঙ্গে এই ঘটনার পরে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়ে নিখোঁজ জেনেও কেন তাঁর মা পুলিশের দ্বারস্থ না হয়ে সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছাত্রীর বয়স জানতে স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০৭
Share:

নবম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্তে নেমে তার ‘প্রেমিকের’ খোঁজ করছে পুলিশ। সেই সঙ্গে এই ঘটনার পরে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়ে নিখোঁজ জেনেও কেন তাঁর মা পুলিশের দ্বারস্থ না হয়ে সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছাত্রীর বয়স জানতে স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এদিকে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, করলা নদী সংলগ্ন পরিত্যক্ত চিলড্রেন পার্কে তাঁর মেয়েকে গণধর্ষণ করা হয়। এর পরে রাতভর মেয়ে তিস্তা বাঁধে একা পড়ে ছিল। রাজনৈতিক দলের অনেকেরই প্রশ্ন, ‘‘এত বড় ঘটনা পুলিশের নজর এড়াল কেমন করে। তবে কি রাতের শহরে পুলিশের নজরদারি বলে কিছু নেই?’’

যদিও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “রাতের শহরে নজরদারির জন্য মোবাইল পুলিশ আছে। কিন্তু সব জায়গায় একসঙ্গে নজর রাখা সম্ভব হয় না।” তাঁর দাবি, “ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত ঠিক পথে এগোচ্ছে। চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

Advertisement

ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ অনুযায়ী, রবিবার রাতে শহরের করলা নদী সংলগ্ন পরিত্যক্ত চিলড্রেন পার্কে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। তার একদিন পরে সোমবার রাতে কেন কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছাত্রীর মা অবশ্য দাবি করেছেন, “আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। তাই সময় মতো থানায় যেতে পারিনি।”

ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধৃত চার যুবক পুলিশের জেরার মুখে ছাত্রীকে নিয়ে পরিত্যক্ত চিলড্রেন পার্কে রাত দশটা পর্যন্ত কাটানোর কথা স্বীকার করে। তাঁরা জানায়, ছাত্রীকে নিয়ে পরিত্যক্ত পার্কের যে ঘরে তারা যায় সেখানে মশা তাড়ানোর জন্য ডিম রাখার ট্রেতে আগুন দিয়ে ধোঁয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অর্ধদগ্ধ সেই ট্রে উদ্ধার হয়েছে। সেখানে পাওয়া গিয়েছে খৈনির প্যাকেট। এ ছাড়াও ছাত্রী এবং ধৃতদের পোশাক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে মেলেনি কোনও মোবাইল ফোন।

ধৃতদের বিরুদ্ধে ‘প্রিভেনশন অব চাইল্ড সেক্সুয়াল অফেন্সের’ (পকসো) ৬ ধারায় মামলা রুজু করে মঙ্গলবার জেলা দায়রা আদালতে তোলা হলেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানায়নি। ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আজ, বৃহস্পতিবার অভিযুক্তদের বিশেষ আদালতে তোলা হবে। সেখানেই ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি। কারণ, ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে একজনের সঙ্গে ছাত্রীটির প্রেমের সম্পর্ক আছে। সেই সূত্রে সে তিস্তা উদ্যানে বেড়াতে গিয়ে ছেলেটির সঙ্গে দেখা করেছিল সে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁদের দুজনকে করলা নদী বাঁধে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন অনেকেই। পরে কেমন করে ছাত্রীটি চারজনের সঙ্গে পরিত্যক্ত চিলড্রেন পার্কে গেল, সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে এখন প্রেমিককে শনাক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদে উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ।

এ দিকে ছাত্রীর মায়ের বক্তব্যেও যথেষ্ট অসঙ্গতি খুঁজে পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ছাত্রীর বয়স ১৮ বছরের বেশি। সেটা কতটা সত্যি জানতে বুধবার ছাত্রীর কোরানিপাড়ার বাড়িতে যায় পুলিশ। কিন্তু সেখানে তেমন কিছু মেলেনি। এর পরে পুলিশের তরফে স্কুলে যোগাযোগ করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন