হরিশ্চন্দ্রপুরে হাসপাতালে হুমকি

অধরা জিয়াউর, ক্ষুব্ধ চিকিৎসক-কর্মীরা

এখনও অধরা যুব তৃণমূল নেতা জিয়াউর রহমান। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ঢুকে চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত ওই যুব নেতা ঘটনার তিন দিন পরেও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে। জামিন অযোগ্য ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হলেও শাসক দলের কারও মদতেই পুলিশ ওই নেতাকে আড়াল করছে কি না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৫ ০১:৪৩
Share:

এখনও অধরা যুব তৃণমূল নেতা জিয়াউর রহমান। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ঢুকে চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত ওই যুব নেতা ঘটনার তিন দিন পরেও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে। জামিন অযোগ্য ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হলেও শাসক দলের কারও মদতেই পুলিশ ওই নেতাকে আড়াল করছে কি না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।

Advertisement

চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘জিয়াউর রহমানকে ধরতে সব রকম চেষ্টা চলছে। সে বাড়িতে নেই। সম্ভাব্য সব জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই তাকে ধরা হবে।’’

অভিযোগ, শুক্রবার রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ঢুকে কর্তব্যরত এক নার্সকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন জিয়াউর রহমান ওরফে জিয়া। পাশাপাশি বিএমওএইচ-সহ অন্য চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরও গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জিয়ার বিরুদ্ধে। ঘটনার দিন রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পেয়ে জামিন অযোগ্য ধারায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ মামলাও শুরু করে। হাসপাতালে ঢুকে জিয়ার লাগামছাড়া আচরণের পরেও তিনি গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন হাসপাতালের চিকিত্সক ও কর্মীদের অনেকেই। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের তরফে দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়েছে। বাকি কাজ তো পুলিশের।’’

Advertisement

জিয়া নিজেকে যুব তৃণমূলের জেলা সম্পাদক বলে দাবি করলেও জেলা সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি তিনি কোনও পদে নেই বলে দাবি করে বলেন, ‘‘পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’

তবে ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগের তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও মালদহে আমাদের এক কাউন্সিলরকে পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু জামিন অযোগ্য ধারায় মামলায় অভিযুক্তকে তিন দিন পরেও পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না। এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। শাসক দলের ছত্রছায়ায় থাকায় পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করছে বলে মনে হচ্ছে।’’

বিজেপির জেলা সম্পাদক শিবেন্দুশেখর রায়ও বলেন, ‘‘অন্য দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেই পুলিশ ঝাঁপিয়ে পড়ে গ্রেফতার করে। শাসকদলের হলেই খুঁজে পায় না।’’ জিয়ার মোবাইল ফোন এ দিনও বন্ধ ছিল। তবে তার ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার দাবি, জিয়ার বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে অভিযোগগুলি তুলেছেন, তিনি ততটা খারাপ আচরণ করেননি। তিনি বলেন, ‘‘ও ভাল পরিবারের ছেলে। যা হয়েছে তা অপরিণত রাজনীতির ফল ছাড়া কিছু নয়।’’

জিয়ার ঘনিষ্ঠ সূত্রেই জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরে না থাকলেও জিয়া মালদহেই রয়েছে। সে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবে, নাকি আদালতে আগাম জামিনের জন্য অপেক্ষা করবে, তা ঠিক করে উঠতে পারছে না। কেন না জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা থাকায় দু’-তিন সপ্তাহ আগে আগাম জামিন মেলা সম্ভব নয়। ফলে এ বিষয়ে দলের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলেই তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন