Pukhuria

বাড়ি গিয়ে পাছে বলে দেয়, তাই ‘খুন’ অনীককে

অনীকের জ্ঞান ফিরলে সবাই জেনে যাবে বলে ভয় পেয়ে যায় তারা। তারপরেই গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে তাকে খুন করা হয় বলে জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে।

Advertisement

বাপি মজুমদার 

পুখুরিয়া শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:২৪
Share:

ধৃত দুই পড়শি। নিজস্ব চিত্র।

পরিকল্পনা ছিল, পড়শি কিশোরকে আটকে ৬০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায়। মালদহের পুখুরিয়ার পরানপুরে অনীক দাস (১৩) খুনে অভিযুক্তদের জেরা করে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। বয়সে কিছুটা বড় হলেও ধৃত দুই যুবকের সঙ্গে খেলাধুলো এমনকি তাদের বাড়িতেও যাতায়াত ছিল অনীকের। তারাই যে এভাবে অনীককে খুন করতে পারে তা ভেবে শিউরে উঠছে গোটা পরানপুর।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া অনীককে খুনের ঘটনায় আবীর দাস ও সাগর কৈবর্ত্যকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক নাবালকও গ্রেফতার হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছিল। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে তার যোগ কতটা রয়েছে সে সে বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়ায় এ দিন তাকে আদালতে তোলেনি পুলিশ। অনীকের সহপাঠী ওই কিশোর ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গেলেও তাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। অনীককে আটকে মুক্তিপন আদায় বা খুন করা হবে তা সে জানত না বলে পুলিশের কাছে সে দাবি করেছে। সব খতিয়ে দেখতেই এ দিন দুই যুবককে চাঁচল আদালতে তোলার পর পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

চাঁচলের এসডিপিও শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘ধৃত দু’জনের কি পরিকল্পনা ছিল তা অনীকের সহপাঠী জানত না বলে দাবি করেছে। তবে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই ধৃতদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির অদূরে একটি পরিত্যক্ত শৌচাগার থেকে অনীকের দেহ উদ্ধার হয়। রাতেই অনীকের সহপাঠী এক নাবালক মিলিয়ে আট জনকে আটক করে পুলিশ। ওই নাবালক ধৃত আবীরের খুঁড়তুতো ভাই। অনীকের বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য পরিকল্পনা করেই ওইদিন সন্ধ্যার পর অনীককে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশের দাবি, কিছুটা নির্জনে কথা বলতে বলতেই অনীকের গলা চেপে ধরে তারা। অনীক জ্ঞান হারাতেই তাকে শৌচাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ফাঁকে তার বাড়ির সামনে মুক্তিপণ চেয়ে চিঠি রেখে আসা হয়। কিন্তু তারপর কীভাবে টাকা আদায় হবে, অনীকের জ্ঞান ফিরলে সবাই জেনে যাবে বলে ভয় পেয়ে যায় তারা। তারপরেই গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে তাকে খুন করা হয় বলে জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে।

অনীকের বাবা আশিস দাস এ দিন থানায় গিয়ে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেকে আর ফিরে পাব না। তবে যারা ঘটনায় জড়িত তাদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছি। পাশাপাশি নির্দোষ কেউ যাতে সাজা না পায় তাও পুলিশকে দেখতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন