বকাবকির জেরে আত্মঘাতী দুই ছাত্র

একই দিনে ঘর থেকে উদ্ধার হল আরেক ছাত্র, সাবিন খাতুনের ঝুলন্ত দেহ। সাবিন করণদিঘি থানার দুর্লভপুর নয়াটোলা এলাকার বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

পৃথক দু’টি ঘটনায় মৃত্যু হল উত্তর দিনাজপুরে দুই পড়ুয়ার। সোমবার সকালে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যায় চিত্তরঞ্জন কর (১৭) নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্র। অন্যদিকে, একই দিনে ঘর থেকে উদ্ধার হল আরেক ছাত্র, সাবিন খাতুনের ঝুলন্ত দেহ। সাবিন করণদিঘি থানার দুর্লভপুর নয়াটোলা এলাকার বাসিন্দা।

Advertisement

চিত্তরঞ্জন রায়গঞ্জের তাহেরপুর হাইস্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সাবিন করণদিঘির সাবধান হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। এ দিন রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহ দু’টির ময়নাতদন্ত করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বাড়ির লোকের বকাবকির জেরে অভিমানে ওই দুই পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানান, আপাতত দু’টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে বাকি পদক্ষেপ হবে।

গত শনিবার রাতে বিষক্রিয়ার জেরে বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ে চিত্তরঞ্জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ দিন সকালে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চিত্তরঞ্জনের বাবা পল্টুবাবু পেশায় কাঠমিস্ত্রি। মা অঞ্জলিদেবী গৃহবধূ। তাঁদের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে চিত্তরঞ্জন মেজ। পল্টুবাবু জানান, এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল চিত্তরঞ্জন। কয়েকদিন ধরে সে ঠিকমতো পড়াশোনা করছিল না। তিনি বলেন, ‘‘পড়াশোনার জন্যই গত শনিবার ওকে বকাবকি করেছিলাম। তারজন্যই অভিমানে ছেলে বাড়িতে রাখা কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করে বলে আমাদের সন্দেহ।’’

অন্যদিকে, আরেক ছাত্র সাবিনের বাবা আব্দুল বসির পেশায় চাষি। মা হাওয়ানুর বিবি গৃহবধূ। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সাবিন ছোট ছিল। সাবিনের দাদা বরকত আলি জানায়, পড়াশোনা না করায় রবিবার রাতে সাবিনকে বাবা ও মা বকাবকি করেন। এরপরেই সাবিন নিজের ঘরে ঘুমোতে চলে যায়।

এ দিন বেলা ১০টা পর্যন্ত তার ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় পরিবারের লোকেদের সন্দেহ হয়। বহু ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া না পেয়ে পুলিশে খবর দেন বাড়ির লোকেরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শোওয়ার ঘরের দরজা ভেঙে টিনের চালার কাঠের সিলিং থেকে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় সাবিনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে।

দুই ছাত্রের এমন মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন আত্মীয় তথা পরিজনেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন