চোরা শিকারির খোঁজ ডুয়ার্সে

মূলত হাতির দাঁত, বিখ্যাত এক শৃঙ্গ গন্ডারের খড়্গ, চিতাবাঘের চামড়া-সহ বিভিন্ন সাপ, প্রজাপতির খোঁজে চোরাশিকারিরা উত্তরের জঙ্গলগুলিতে হানা দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ডুয়ার্সের বিভিন্ন জঙ্গল, অভয়ারণ্য এবং জাতীয় উদ্যানে চোরাশিকারিদের খোঁজে বন দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে তল্লাশি চলছে বলে জানালেন সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) শিলিগুড়ি ফ্রন্টিয়ারের আইজি শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বুধবার এসএসবি ৫৪ তম প্রতিষ্ঠা দিবস। তার ২৪ ঘন্টা আগে মঙ্গলবার আইজি জানান, ভুটান সীমান্তবর্তী বিভিন্ন জঙ্গলে চোরাশিকারিরা হানা দিতে পারে বলে খবর রয়েছে। বিষয়টি জানার পর বন দফতরের সঙ্গে যৌথভাবে তল্লাশি চলছে। মূলত হাতির দাঁত, বিখ্যাত এক শৃঙ্গ গন্ডারের খড়্গ, চিতাবাঘের চামড়া-সহ বিভিন্ন সাপ, প্রজাপতির খোঁজে চোরাশিকারিরা উত্তরের জঙ্গলগুলিতে হানা দেয়।

Advertisement

শ্রীকুমারবাবু বলেন, ‘‘উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় চোরাশিকারিরসক্রিয়। তারা ভুটান ও নেপালের করিডরকে ব্যবহার করে। সেই জন্য এসএসবি বিশেষভাবে সতর্ক রয়েছে। অগস্ট মাসেই বাহিনীর প্রথম নিজস্ব গোয়েন্দা শাখা ‘জি ব্রাঞ্চ’ তৈরি হয়েছে। ওই শাখার অফিসারদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে। বেশ কিছু সাফল্য মিলছে।’’ সম্প্রতি বন দফতরের তরফেও চোরাশিকারিদের খোঁজে তল্লাশি কথা জানিয়েছে।

এসএসবি-র তরফে জানানো হয়েছে, গত বছর জাল টাকা, বিদেশি টাকা, মূর্তি, মাদক, অস্ত্র, গবাদি পশু ছাড়াও বন্যপ্রাণ ও বনজ সম্পদ মিলিয়ে ১১০ কোটি টাকার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এ বার ডিসেম্বর অবধি সেই টাকার অঙ্ক প্রায় ৫৫৩ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে, ১০১১ জন চোরাকারবারিকে।

Advertisement

আইজি জানান, কয়েক মাস আগে ভুটান থেকে নেপাল হয়ে চিনে পাচারের সময় ১০০ কোটি টাকার সাপের বিষ উদ্ধার হয়। এ ছাড়াও গাছ, ভেষজ দ্রব্য, বুনো জন্তুর চোরাকারবার রয়েছে। চলতি বছরের কাজের জন্য শিলিগুড়ি ফ্রন্টিয়ার বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বিভাগে সেরা হয়েছে। আগামী ২৩ ডিসেম্বর দিল্লিতে সেই পুরস্কারও দেওয়া হবে।

বাহিনীর অফিসারেরা জানান, নেপাল এবং ভুটান সীমান্ত খোলা সীমান্ত। কাঁটাতারের বেড়া নেই। তাই সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের সাহায্য নিয়েই নজরদারি চালাতে হচ্ছে। শিলিগুড়ি করিডরকে ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে বিভিন্ন সংগঠন এক সময় সক্রিয় থাকলেও এখন পরিস্থিতি অনুকূল। তবে মানব পাচার নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

বিভিন্ন স্কুল, কলেজের ছেলেমেয়েদের মধ্যে তা নিয়ে শিবির চলছে। গত এক বছরে এমনই ৪৩ জনকে উদ্ধার করা ছাড়াও ১৮ জন পাচারকারীরে গ্রেফতার করা হয়েছে। জয়গাঁ ও পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে ১০টি করে সিসিটিভিও বসানো হয়েছে।

এ দিন সিকিমে আরও দুই কোম্পানি এসএসবি বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তের কথাও এসএসবি-র তরফে জানানো হয়েছে। অফিসারেরা জানান, নেপাল সীমান্তে ৯০টি চৌকি এবং ভুটান সীমান্তে ৫৮টি চৌকি রয়েছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে সিকিমে আরও ৫টি চৌকি বাড়ানো হবে। পরপর পাঠানো হবে আরও ২ কোম্পানি ফোর্সও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন