পুলিশের ভেঙে দেওয়া মণ্ডপ। ছবি: অমিত মোহান্ত
রাস্তা আটকে জোর করে শনিপুজোর চাঁদা আদায়ের অভিযোগে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিলেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার।
শনিবার বিকেল ৫টা নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর শহরের চৌপথি এলাকায় চাঁদা তোলার জেরে রাস্তার দু’ধারে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুরগামী বহু বাস ও ট্রাক আটকে পড়ে। সেসময় ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি করে যাচ্ছিলেন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার। তাদের নির্দেশে লাঠি উঁচিয়ে পুলিশ তাড়া করলে চাঁদা আদায়কারীরা পালিয়ে যায়। এরপর রাস্তা দখল করে রাখা বিভিন্ন সরঞ্জাম ও ডিজে সাউন্ডবক্স পুলিশ ভেঙে দেয় বলে অভিযোগে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদে কর্মী সমর্থকরা পথ অবরোধ শুরু করলে ফের ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে যায়। পুলিশ লাঠি চালিয়ে অবরোধকরীদের হটিয়ে দেয়। জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন,‘‘৫১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের তিনমাথার মোড় আটকে চাঁদা তোলায় যানজটে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। বেআইনি কাজকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ লাঠি চালানোর অভিযোগ মানতে চাননি পুলিশ সুপার। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের স্থানীয় নেতা রতন ঘোষ বলেন, ‘‘সকলে মিলেই আমরা পুজো করছিলাম। সরাসরি বক্স ও সরঞ্জাম ভেঙে ফেলা ঠিক হয়নি। প্রশাসন থেকে আমাদের বারণ করতে পারত।’’ অবশ্য গঙ্গারামপুরের তৃণমূল নেতা তথা ভাইস চেয়ারম্যান অমলেন্দু সরকার বলেন, ‘‘অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে দলের তরফে প্রশাসনের নিন্দা না করে পাশে দাঁড়ানো উচিত।’’
জানা গিয়েছে, এ দিন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কর্মী সমর্থকদের উদ্যোগে চৌপথিতে শনিপুজোর আয়োজন করা হয়। সকাল থেকে রাস্তার ধারে উঁচু শব্দে বাজছিল ডিজে সাউন্ডবক্স। রাস্তার ধারে পোঁতা হয়েছিল কলাগাছ। ট্রাফিক পুলিশের সামনে চৌমাথার মোড়ে বালুরঘাট-গঙ্গারামপুরের মধ্যে যাতায়াতকারী সমস্ত গাড়ি আটকে পুজোর চাঁদা তোলা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। শাসক দলের শ্রমিক নেতাকর্মীদের দাপটে গঙ্গারামপুর থানাও হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। সরকারি কাজে সে সময় জেলাশাসক তাপস চৌধুরী এবং জেলা পুলিশ সুপার রসিদ মুনির খান গাড়ি নিয়ে গঙ্গারামপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। যানজটে তাদের গাড়িও আটকে পড়ে। জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে যান। চৌপথিতে রাস্তা আটকে চাঁদা তোলার ওই আস্ফালন দেখে তারা ক্ষেপে যান। দীর্ঘক্ষণ মুখ বুজে থাকা পুলিশ কর্মীরাও লাঠি নিয়ে অভিযানে নেমে পড়েন।