রাজনাথ সিংহ।
রথযাত্রায় বাধা দিলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সভার অনুমতি দিতে পুলিশ প্রশাসন যে সেই পথে হাঁটবে না, তার ইঙ্গিত মিলেছে। ২ ফেব্রুয়ারি কোচবিহারের মাথাভাঙায় রাজনাথের সভা। বিজেপি সূত্রে খবর, পুলিশ কর্তারা তাঁদের স্পষ্টই জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে আবেদন করলে ওই অনুমতি দিতে তারা দেরি করবেন না।
কেন রাজনাথের ক্ষেত্রে কোনও বিরোধে যেতে চাইছে না রাজ্যের শাসক দল? দলীয় ও প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রথমত, রাজনাথ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এমন একজন মন্ত্রীর সভার ক্ষেত্রে কোনও বাধা দিলে কেউ সেটা ভাল চোখে নেবে না। দ্বিতীয়ত, দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে এসে জানিয়ে দেন, কারও কোনও সভার ক্ষেত্রে প্রশাসন বা সরকার কাউকে বাধা দেয় না। মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরে স্বাভাবিক ভাবেই কেউ আর বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভাবছেন না। তৃতীয়ত, তৃণমূলের অন্দরের খবর, মমতার সঙ্গে রাজনাথের অনেক দিনের সুসম্পর্ক। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা রাজনাথের সঙ্গে মমতার সেই সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বর্তমানে তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী দল হলেও তাঁদের দু’জনের সম্পর্ক অটূট রয়েছে। তাই ওই সভায় আপত্তি তোলার কথা কেউ ভাবছেন না।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “এ বারে মাঠের অনুমতি পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে। সমস্ত দিক চিন্তা করে মেলার মাঠে সভা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
কিন্তু এর আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর সভা বা ৭ ডিসেম্বর কোচবিহারের ঝিনাইডাঙা থেকে বিজেপির রথযাত্রার সভার অনুমতি নিয়ে বেঁকে বসেছিল প্রশাসন। রথযাত্রা উপলক্ষে ওই দিন সেখানে একটি সভার ডাক দেওয়া হয়। উপস্থিত থাকার কথা ছিল অমিতের। ওই সভার জন্য প্রথম দিকে কোচবিহার শহরের সরকারি তিনটি মাঠের জন্য আবেদন করেছিল বিজেপি। অন্য অনুষ্ঠান রয়েছে বলে বিজেপিকে মাঠ দেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত ঝিনাইডাঙাতে দলীয় কর্মীর ব্যক্তিগত জমিতে সভার আয়োজন করলেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিজেপির নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “আসলে তৃণমূল ভয় পেয়ে নানা জায়গায় বিজেপির সভা আটকানোর পরিকল্পনা করেছে। যে সব জায়গায় সুবিধে করতে পাচ্ছে না, সেখানে পিছিয়ে যাচ্ছে।”
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ অবশ্য দাবি করেন, “বিজেপি নানা সময় নানা জায়গায় মিটিং-মিছিল করে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে। তাই আদালত নানা জায়গায় অনুমতি দেয়নি। তৃণমূল কোনও দলের সভায় কখনও বাধা দেয়নি।” কোচবিহার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সরকারি ভাবে এখনও ওই সভা নিয়ে কোনও নির্দেশ আসেনি। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভা ঘিরে প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”