জঙ্গি-ভ্রমে আটক ঘুরতে বেরোনো নয় তরুণ

রাতের অন্ধকারে রায়ডাক নদীর বুক চিড়ে ছুটে আসছিল ভটভটি নৌকা। সামান্য আলোতে বোঝা যাচ্ছিল বেশ কয়েকজন রয়েছে সে নৌকায়। নদী পথে তাহলে কি এ রাজ্যে ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশের জঙ্গি ?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৬ ০২:১০
Share:

রাতের অন্ধকারে রায়ডাক নদীর বুক চিড়ে ছুটে আসছিল ভটভটি নৌকা। সামান্য আলোতে বোঝা যাচ্ছিল বেশ কয়েকজন রয়েছে সে নৌকায়। নদী পথে তাহলে কি এ রাজ্যে ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশের জঙ্গি ?

Advertisement

দ্রুত সেই আশঙ্কার কথা ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে গ্রামবাসীরা লাঠি বল্লম নিয়ে নদীর ধারে জমা হতে শুরু করেন। খবর যায় শামুকতলা থানায়। বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘিরে ফেলে গোটা চত্বর। দেখা যায় ছোট্ট একটি ভটভটি নৌকায় ঠাসাঠাসি করে রয়েছে নয় যুবক। তাঁদের ধরে থানায় এনে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদের পর ভুল ভাঙে সবার। জানা যায় রাতের অন্ধকারে নৌকাবিহারে বেড়িয়েছিলেন ওরা। ওরা বলতে শালিখ চৌধুরি, জীবন রবি দাস, অনন্ত দাস, দীপেন বর্মণ, কার্তিক বর্মণ,পাপাই বর্মণ সহ নয় বন্ধু।

ওরা কেউ দিন মজুর। কেউ আবার ছোট ব্যবসায়ী। বয়স ২২ থেকে ৩০। পুলিশ জানিয়েছে ওদের সবার বাড়ি কোচবিহার জেলার ধলপল গ্রামে। রবিবার রাতে শামুকতলা থানার চিকলিগুড়ি গ্রামের এই ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার সকালে জঙ্গি দেখতে অনেকেই থানায় ছুটে আসেন।

Advertisement

আলিপুদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, তল্লাসি চালিয়ে ওই নয় যুবকের কাছে কিছুই পাওয়া যায়নি। ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় রাতের অন্ধকারে অ্যাডভেঞ্চারের উদ্দেশ্যে ওরা ভটভটি নৌকায় চেপেছিলেন। সন্দেহজনক কিছু না মেলায় ওই নয় যুবক কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

জীবন রবি দাসের জানান তাঁদের বন্ধু শালিখ রায়ডাক নদীতে খেয়া পারাপার করে। নতুন একটি ভটভটি নৌকা কিনেছে সে। রাতে ন’বন্ধু মিলে নতুন ভটভটি নৌকায় চেপে রায়ডাক নদীতে নৌকাবিহারে বেড়িয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘কখন যে আলিপুরদুয়ারের চিকলিগুড়ি পৌঁছে গিয়েছিলাম সেটা বুঝতেও পারিনি আমরা। পুলিশ উদ্ধার না করলে জঙ্গি ভেবে গ্রামবাসীরা আমাদের মেরেই ফেলতো। ’’

গতকাল রাতের অভিজ্ঞতায় রীতিমত ভয়ে সিটিয়ে আছে ভটভটি নৌকার মালিক শালিখ চৌধুরি নামে ওই যুবকও। তিনি বলেন, ‘‘আমি নৌকা পারাপার করি। বন্ধুরা নৌকা বিহারে যাওয়ার কথা বলতেই রাজি হয়ে যাই। সামান্য আনন্দ করার ফল যে এমন তিক্ত হবে জানলে কি আর সখের নৌকা বিহারে বের হই।’’

চিকলিগুড়ি গ্রামের বাসিন্দা সুখেন রায় বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে বাংলাদেশে পরপর জঙ্গি হানা হয়েছে। এ রাজ্যে ওই জঙ্গিরা ঢুকতে পারে বলে সংবাদে জেনেছি। এত রাতে ওদের দেখে সন্দেহ হওয়াতে সবাইকে ডাকাডাকি শুরু করি। আমরা কি জানতাম অত রাতে ওরা সখের নৌকা বিহারে বেড়িয়েছে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন