এত শুভেচ্ছা দূত কেন, তরজায় গৌতম-অশোক

উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম গ্রন্থন সেনগুপ্তের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ (শুভেচ্ছা দূত) হওয়ার ঘোষণা। আর তাই নিয়েই নারদ-নারদ পরিস্থিতি এখন শিলিগুড়িতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০২:৪০
Share:

তৃণমূলের মন্ত্রী গৌতম আর সিপিএমের মেয়র অশোকের তরজায় সরগরম শহরের রাজনীতি।

তাল ঠুকছেন দু’পক্ষই। বাক্যবাণে একে অন্যকে বিধঁছেন সুযোগ মতো। বিষয়, উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম গ্রন্থন সেনগুপ্তের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ (শুভেচ্ছা দূত) হওয়ার ঘোষণা। আর তাই নিয়েই নারদ-নারদ পরিস্থিতি এখন শিলিগুড়িতে। তৃণমূলের মন্ত্রী গৌতম আর সিপিএমের মেয়র অশোকের তরজায় সরগরম শহরের রাজনীতি।

Advertisement

শিলিগুড়ি পুরসভার শুভেচ্ছা দূত নিয়ে দু’জনেই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারে থাকার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার দুপুরে শিলিগুড়ির কলেজপাড়ার বাড়িতে বসে মেয়রের কাজকর্ম সম্পর্কে নানা অভিযোগ করেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘শহরটা জঞ্জাল আর বিজ্ঞাপন নগরীতে পরিণত হয়েছে। পুর পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। আর মেয়র শহরের জন্য একের পর-এক শুভেচ্ছা দূত ঘোষণা করে চলেছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সব সময় কৃতী বা খেলায়াড়দের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে প্রচারের আলোয় রাখতে চান মেয়র। আগেও রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার সময় তাই করেছেন। এখনও সেই চেষ্টা করছে। পুর পরিষেবায় জোর না দিয়ে, এবার কি ৪৭টা ওয়ার্ডে ৪৭ জন শুভেচ্ছা দূতের মুখ দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে শহরবাসীকে?’’

গত রবিবার দুপুরে গ্রন্থন সেনগুপ্তের হাকিমপাড়ার বাড়িতে একদল কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে যান মেয়র অশোকবাবু। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের বিরুদ্ধে প্রচারে গ্রন্থনকে তিনি সহযোগিতা করার কথা বলেন। মেয়র গ্রন্থনকে পুরসভার শুভেচ্ছা দূত হওয়ার কথাও বলে এসেছেন বলে জানান। এর আগে জাতীয় ক্রিকেটার তথা শহরের ছেলে ঋদ্ধিমান সাহাকেও শুভেচ্ছা দূত হিসেবে ব্যবহার করার কথা বলেন মেয়র।

Advertisement

পুরসভার ‘স্বচ্ছ আমি, স্বচ্ছ তুমি-স্বচ্ছ শিলিগুড়ি’ স্লোগান দিয়ে ঋদ্ধিমানের কিছু ফোটো, বোর্ড শহরে ঝোলানো হয়েছিল। পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলরদের দাবি, প্রচারের মুখ, শুভেচ্ছা দূতের কথা বলা হলেও, তাতে কাজ কিছুই এগোয়নি। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ করা থেকে, জঞ্জাল অপসারণ, ডেঙ্গি সচেতনতার মতো অনেক ক্ষেত্রেই পুরসভার এমন উদ্যোগ সফল হয়নি।

গৌতমবাবু জানান, ‘‘অশোকবাবু যা করছেন, তাতে কৃতীদের প্রতি সুবিচার করা হচ্ছে বলে আমার মনে হয় না। এক সময় উনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে শহরে নানা কথা বলে বেড়াতেন। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে ভাইপোও বলতেন। বিদেশ থেকে টেলিফোন করছেন, শহর নিয়ে কথা হচ্ছে, তখন এসব কথা শুনতাম। সৌরভের সঙ্গে মেয়রের ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকলেও মেয়র সেটা প্রচারের উপরেই জোর দিতেন। সৌরভকে বাড়িতে ডেকে ফোটো তোলানো হত। এ সব না করে পুর পরিষেবা, নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্যে উনি কিছুটা মন দিলে শহরবাসী উপকৃত হত।’’

মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দেগেছেন মেয়র অশোকবাবুও। বিকালে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘গৌতমবাবুর কথার খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছি না। আসলে ওঁর তো সময়টা খারাপ যাচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজ্যের তিনজন মন্ত্রী পদ খুইয়েছেন। চার নম্বর কে হবেন, সেসব নিয়েই উনি হয়তো চিন্তায় আছেন। দফতরের কাজকর্ম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও ভর্ৎসনা করেছেন।’’

মেয়র জানান, ‘‘আমার তো বয়স হয়ে গিয়েছে। প্রচার বা কিছু পাওয়ার আশা করি না। মনে হয়, আমার বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলে, গৌতমবাবুই প্রচারে আসতে চাইছেন। তা করে যদি ওঁর কিছু হয় তা হলে খুশিই হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন