india

শেষযাত্রায় রেষারেষি 

হাসিমারা সেনাছাউনিতে প্রবেশ করতে না পারা নিয়েও তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তোলে বিজেপি।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২০ ০৬:৪৬
Share:

শেষযাত্রা: নিহত জওয়ান বিপুল রায়ের দেহ পৌঁছল বিন্দিপাড়ার বাড়িতে। ছবি: নারায়ণ দে

কে আগে পৌঁছবেন দেহের কাছে? এক জন একটু এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই অন্যজন কার্যত কনুই দিয়ে ঠেলে দিলেন। শোকার্ত পরিবেশেও এই দৃশ্য চোখ টানল অনেকের। টিপ্পনিও শোনা গেল নিচু স্বরে: এ তো মেসি-রোনাল্ড!

Advertisement

বিপুল রায়ের মরদেহ তাঁর নিজের বাড়িতে পৌঁছনোর পর তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদদের মধ্যে এই রেষারেষি শুরু হয়েছিল এ দিন দুপুরে হাসিমারা সেনা ছাউনি থেকে। শুক্রবার দুপুর তিনটে নাগাদ হাসিমারা থেকে বিন্দিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। তার অনেক আগেই অবশ্য সেখানে পৌঁছে যান রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব ও তৃণমূলের জেলা নেতারা। তাঁদের মতোই সেখানে পৌঁছন বিজেপি সাংসদ জন বার্লা, বিধায়ক মনোজ টিগ্গারাও। কিন্তু হাসিমারা সেনাছাউনির ভিতরে নিহত জওয়ানকে শ্রদ্ধা জানাতে ঢোকেন গৌতম। সঙ্গী ছিলেন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী, জেমস কুজুর, তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। ঢুকতে পারেননি জন ও মনোজ। বাধ্য হয়ে তাঁরা বিন্দিপাড়ার দিকে রওনা হয়ে যান। মাঝপথে সেই খবর পেয়ে আর হাসিমারার দিকে না গিয়ে বিন্দিপাড়ার দিকে রওনা হন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও।

কিন্তু প্রায় সন্ধ্যায় বিপুলের মরদেহ তাঁর বাড়িতে পৌঁছতেই দু’পক্ষের মধ্যে কে আগে কফিনের কাছে পৌঁছবেন, তাই নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়, বলছেন স্থানীয়রাই। তাঁদের আরও দাবি, ঠিক তখনই বাড়ির উঠোনে ঢুকতে একটি সরু জায়গায় মন্ত্রী গৌতম ও জনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। গৌতমের অভিযোগ, ‘‘জন ও নিশীথই আমায় ধাক্কা দিয়েছেন।’’ জন পাল্টা বলছেন, ‘‘গৌতমের নিরাপত্তারক্ষীরা আমায় ধাক্কা দেন।’’ সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন গৌতম। আর দলের কয়েক জন নেতা-কর্মীদের দেখিয়ে নিশীথ বলেন, ‘‘ওঁদের যাঁরা ধাক্কা দিয়েছিলেন, তাঁদের আমি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছি।’’

Advertisement

হাসিমারা সেনাছাউনিতে প্রবেশ করতে না পারা নিয়েও তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তোলে বিজেপি। গৌতম অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’’ জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা বলেন, ‘‘এটা সেনাবাহিনীর বিষয়।’’

এই রাজনৈতিক সংঘাতকে দূরে সরিয়ে হাসিমারা থেকে বিন্দিপাড়া পর্যন্ত প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বহু মানুষ চোখের জলে বিপুলকে শ্রদ্ধা জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement