Siliguri

‘রাজনীতি’ নয়, সৌজন্যের ছবিই দেখল শহর

বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ফোন করে গৌতম দেব, সৌরভ চক্রবর্তীদের আমন্ত্রণ জানান। মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ ও প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২২ ০৯:১০
Share:

মাঙ্গলিক: অনুষ্ঠানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পাশে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব ও এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।

‘এলিভেটেড করিডর’ প্রকল্পের কাজের সূচনায় এক রাজনৈতিক সৌজন্যের ছবি দেখল শিলিগুড়ি। বৃহস্পতিবার দাগাপুরের মাঠে ওই অনুষ্ঠান মঞ্চে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী, বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা, জয়ন্ত রায়দের সঙ্গে দেখা গেল শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীকে। যেখানে ছিলেন বিজেপির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, আনন্দময় বর্মণ, শিখা চট্টোপাধ্যায়রাও। এক সঙ্গে প্রদীপও জ্বালালেন তাঁরা। প্রদীপ জ্বালানোর সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নাম করে মেয়র, এসজেডিএ-র চেয়ারম্যানকে প্রদীপ জ্বালাতে এগিয়ে দেন।

Advertisement

আগের দিনই বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ফোন করে গৌতম দেব, সৌরভ চক্রবর্তীদের আমন্ত্রণ জানান। মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ ও প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। কর্মসূচি থাকায় অশোক থাকতে পারবেন না জানিয়েও দেন। গৌতম ও সৌরভ ছিলেন অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করার অনুরোধ এলে মেয়র এবং এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান বক্তব্য রাখেননি।

অনুষ্ঠান শেষে মেয়র বলেন, ‘‘রাজ্য শক্তিশালী হলেই কেন্দ্র শক্তিশালী হয়। রাজ্য থেকে সংগৃহীত অর্থের একটা অংশ বিভিন্ন কাজে রাজ্যকে দেওয়া হয়। তার একটা নিয়ম আছে। আজ জাতীয় সড়কের প্রকল্পের কাজের সূচনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসেছেন। আমাদের আমন্ত্রণ জানানোয় এসেছি। রাজ্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষই কাজের তদারকি করবে। সরকারি অনুষ্ঠানের প্রোটোকল মেনে এসেছি।’’

Advertisement

তবে অনুষ্ঠানে মেয়রের মতো অতিথিদের সংবর্ধনা দেওয়ার সময় ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিও ওঠে দর্শক আসনে থাকা কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। যা নিয়ে বিজেপির বিধায়ক তথা দার্জিলিং জেলা সভাপতি আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘অতিথিদের সম্মান জানানো আমাদের উচিত। সরকারি অনুষ্ঠান। এখানে এমন ধ্বনি না দিলেই হত।’’ মেয়র বলেন, ‘‘কে, কী স্লোগান দিলেন সেটা তাঁদের সংস্কৃতি। সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধী পক্ষের মানুষদের ডাকা হয়েছে, এখানে মেয়র হিসাবে শহরের প্রতিনিধিত্ব করছি, সে ভাবে আচরণ করাটাই কাম্য।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজের বক্তব্যে রাস্তার কাজের জন্য দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির সাংসদের তদ্বির করা নিয়ে প্রশংসা করেন। তা নিয়েও কথা বাড়াতে চাননি মেয়র। বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাস্তার কাজের জন্য মনমোহন সিংহের সময় থেকে চিঠি দিচ্ছেন। নীতিন গডকড়ীর সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে। এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা, সেনাদের যাতায়াত, পর্যটনের সুবিধার মতো নানা বিষয় জড়িত। সবার সহযোগিতায় তা হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী ভাবে বলবেন সেটা তাঁর বিষয়।’’ সৌরভ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের অনেক পাওনাগণ্ডা রয়েছে। সেগুলোর জন্যও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলেছি।’’

এ দিন মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এই খবর পাওয়ামাত্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে তাঁর উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। মঞ্চে বিরোধীদের উপস্থিতি এবং পরে, নীতিনের শুশ্রূষার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতা— সব মিলিয়ে রাজনৈতিক সৌজন্যের নিরিখে উজ্জ্বল হয়ে থাকল দিনটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন