বার্তা: এরকম পোস্টারই পড়েছে পাহাড়ে। নিজস্ব চিত্র
পাহাড়ে বিমল গুরুং, রোশন গিরিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে পোস্টার সাঁটল ‘পাহাড়ের জনতা’। শুক্রবার ভোরে প্রথমে কার্শিয়াং রেল স্টেশনের কাছে ওই হাতে লেখা পোস্টার দেখা যায়। পরে কালিম্পংয়ের ডম্বরচকেও একই পোস্টার দেখা যায়। তাতে লেখা হয়েছে, পাহাড়ে আন্দোলনের নামে আগুন জ্বালিয়ে গা ঢাকা দেওয়া বিমল-রোশন আর দার্জিলিঙে ফিরুন তা কেউ চান না। তাঁরা যেন পাহাড়ে ফেরার চেষ্টা না করেন, সেই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে পোস্টারে।
হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, অতীতে সুবাস ঘিসিং সমতলে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর পরে দেহ নিয়ে পাহাড়ে ফিরতে চাইলে বিমল-রোশনরা বাধা দিয়েছিলেন। সেকারণে পাহাড়ে স্ত্রীর দেহ নিতে পারেননি জিএনএলএফের তৎকালীন সভাপতি। সে জন্য প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে বিমল-রোশনদের, এমন দাবিও করা হয়েছে পাহাড়ের জনতার নামে দেওয়া ওই পোস্টারে। এ নিয়ে যদিও বিমল-রোশন রাত পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেননি। তবে শীঘ্রই কোনও বিবৃতি দেওয়া হতে পারে বলে পাহাড়ের অনেকে মনে করছেন। দার্জিলিং পুলিশও বিষয়টি নজরে রেখেছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই পোস্টার সাঁটানো নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। কে বা কারা ওই কাজ করেছে তা গোয়েন্দা শাখা খতিয়ে দেখছে বলে সূত্রের খবর।
পাহাড়ের রাজনীতিকদের অনেকের অনুমান, সম্প্রতি শিলিগুড়িতে বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। আগামী ডিসেম্বরে কোচবিহারের মদনমোহনবাড়ি থেকে যে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও রথ’যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি তাতে পাহাড় থেকেও অংশগ্রহণ চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। পাহাড় থেকে উপরথ বের করে তা শিলিগুড়িতে মূল রথে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে দল সূত্রের খবর। গত মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা শিব প্রকাশের উপস্থিতিতে গুরুংয়ের পাহাড়ে ফেরার পক্ষে সওয়াল করেছেন কয়েকজন।
বিনয় তামাং শিবিরের কয়েকজন নেতা জানান, তাই হয়তো পাহাড়ের ‘জনতা’ ক্ষেপে গিয়ে ওই পোস্টার দিয়েছে। জিএনএলএফের তরফে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা অজয় এডওয়ার্ড জানান, পোস্টার কে বা কারা দিয়েছে তা প্রশাসন দেখুক। পাহাড়ের তৃণমূলের মুখপাত্র তথা মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই বলেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষ শান্তি ফেরায় নিশ্চিন্তে কাজ করছেন। এখন অশান্তি ছড়াতে পারে এমন কোনও শক্তি পাহাড়ে ফিরুক তা পাহাড়বাসী চাইছেন না বলেই হয়তো ওই পোস্টার সেঁটেছেন।’’