পিঠে-পুলি, মালপোয়ায় পৌষ পার্বণ

মকর সংক্রান্তিতে ফুটপাত থেকে ঝা চকচকে শপিং মল। সব জায়গাই দখল নিল নানা পিঠে। শিলিগুড়ির ফুটপাতে, আলিপুরদুয়ারের দোকানে সিঙ্গারা সরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে পাটিসাপটা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১৫
Share:

মিষ্টিমুখ: আলিপুরদুয়ারে একটি দোকানে পিঠের সম্ভার। নিজস্ব চিত্র

বেশ কিছুদিন ধরেই মিষ্টির দোকানে জায়গা করে নিয়েছিল পিঠে-পায়েস। নানা মেলার স্টলে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে পাটিসাপটা, মালপোয়া। মকর সংক্রান্তিতে ফুটপাত থেকে ঝা চকচকে শপিং মল। সব জায়গাই দখল নিল নানা পিঠে। শিলিগুড়ির ফুটপাতে, আলিপুরদুয়ারের দোকানে সিঙ্গারা সরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে পাটিসাপটা। রানিনগরে ট্রেনেও বিক্রি হয়েছে চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি পিঠে।

Advertisement

মোয়া, তিলের খাজা

Advertisement

ব্যস্ত বিধানরোডের দু’পাশে পাটিসাপটা, তিলের খাজা বিক্রি শুরু হয়েছিল শীতের শুরুতেই। ঠান্ডা যতই বেড়েছে সম্ভারও বেড়েছে। মুড়ি-চিঁড়ের মোয়া, তিলের নাড়ু, নারকেলের পুর দিয়ে পাটিসাপটা তৈরি হতে না হতেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। রবিবার দেখা গেল ফুটপাতেই চলছে চাল গুঁড়ো করার কাজ। উনুনে হাঁড়ি উপুড় করে পিঠে ভাজাও হচ্ছে। বিধানরোডের পাশে একটি জনপ্রিয় মিষ্টির দোকানের সামনে পুরির বদলে হচ্ছে মালপোয়া। মাটিগাড়ার একটি শপিং মলে প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান রয়েছে। সেখানে এক ক্রেতার সরস মন্তব্য, ‘‘যাই হোক মিষ্টির দোকানের হাত ধরেই পিঠের তো মল প্রবেশ হলো।’’

সিঙারা সরিয়ে পিঠে

রোজ থাকে সিঙারা, কচুরি। কিন্তু পৌষ সংক্রান্তির দিন সকাল থেকেই সেই জায়গা দখল করে নিয়েছিল গরম গরম পিঠে। আলিপুরদুয়ার বেলতলা মোড় এলাকায় একটি মিষ্টির দোকানে ক্রেতাদের পায়েস, ক্ষীর, পাটিসাপটা, মালপোয়া তৈরি ছিল এ দিন। দোকাল মালিক জয়দেব ঘোষ জানান, গত বছর পাটিসাপটা মালপোয়া দিয়ে শুরু করেছিলেন। ভালো সাড়া পাওয়ায় এ বছর দু’রকম মালপোয়া বানিয়েছেন। পাল্লা দিয়ে বিকিয়েছে নলেন গুড়ের রসগোল্লা ও সন্দেশ।

ট্রেনেও সংক্রান্তি

চলন্ত ট্রেনেই সাদা ভাপা পিঠে খেয়ে পৌষ সংক্রান্তি পালন৷ সৌজন্যে জলপাইগুড়ির রানিনগর রেল স্টেশন৷ সারা বছরই স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি ভাপা পিঠে বিক্রি হয়। কিন্তু পৌষসংক্রান্তির দিন এর চাহিদাটা যেন বেড়ে যায়৷ দুপুর আড়াইটা নাগাদ তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস রানিনগর স্টেশনে ঢুকতেই প্ল্যাটফর্মে নেমে ভাপা পিঠের খোঁজ শুরু করে দিলেন যাত্রীরা৷ কেউ পিঠে কিনে ট্রেনে বসেই খেতে শুরু করলেন। ভাল লাগায় আবার নেমে ব্যাগ ভরে কিনলেন পিঠে। তাদেরই একজন রাণাঘাটের বাসিন্দা উত্তম মিস্ত্রী৷ কৃষি দফতরে কাজের সূত্রে জলপাইগুড়িতে থাকেন তিনি। বলেন, ‘‘বাইরে একাই থাকি৷ পৌষে পিঠে জোটে না৷ এ বার বাড়ি যাচ্ছি। কপালজোড়ে চলন্ত ট্রেনেই এ বার পৌষ পার্বণ সাড়া হয়ে গেল৷’’

মন্ত্রী ও পিঠে

কেউ মাতলেন চাল গুঁড়ো করার প্রতিযোগিতায়। কেউ অনুষ্ঠানে মধ্যে বিলি করলেন পিঠে। মকর সংক্রান্তির দিনে এমনই অনুষ্ঠানে মাতল কোচবিহার। মাথাভাঙার হাজরাহাটে লোকপ্রসার শিল্পের অনুষ্ঠান হয়। ভাপা, পোয়া, পুলি পীঠে বিলি হয় সেখানে। উপস্থিত ছিলেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। তাঁর সহাস্য মন্তব্য, “লোভ সামলাতে পারিনি। খেয়ে নিয়েছি।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বয়স হয়েছে। পিঠে খেতে পারি না। ছোটবেলায় বাড়িতে চুরি করে খেতাম। সেই কথাই খুব মনে পড়ে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন