প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বাড়াতে যখন তত্পর প্রশাসন, তখন বুধবার সকালে মহকুমা হাসপাতাল থেকে এক প্রসূতিকে রেফার করার অভিযোগ উঠল ইসলামপুরে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবশ্য ফের প্রসূতিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হল হাসপাতালে। তা নিয়ে দিনভর চলল শোরগোল।
প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় উত্তরদিনাজপুরের গোয়ালপোখরের দুধকুমারের বাসিন্দা এক গৃহবধু শেহনাজ বেগমকে গোয়ালপোখরের লোধন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা না থাকায় তাকে রেফার করা হয় ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে। অভিযোগ, ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাকে দেখে সেখান থেকে রেফার করে দেন। তখন হাসপাতালেরই একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ওই প্রসূতিকে ইসলামপুরের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন পরিবারের লোকেরা।
তবে লোকজনের থেকে বিষয়টি জানতে পেরেই গোয়ালপোখরের বিডিও রাজু শেরপা, মহকুমা শাসককে জানান। তাঁদের হস্তক্ষেপে প্রসূতিকে আবার হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়। বিডিও রাজু শেরপা বলেন, ‘‘প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব এই এলাকাতে অনেক কম। সেখানে আশাকর্মী ওই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। সেখানে থেকে তাকে রেফার করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’’
জানা গিয়েছে, এ দিন ওই হাসপাতালে দায়িত্বে ছিলেন স্ত্রীরোগ বিশেষঞ্জ রঞ্জন মুস্তাফি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই প্রসূতির শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। তাই পরিবারের লোকেদের বন্ড সই করতে বলা হয়েছিল। ওঁরাই এরপরে আর প্রসূতিকে হাসপাতালে রাখতে রাজি হননি।’’ শেহনাজের স্বামী গুল মহম্মদ বলেন, ‘‘সিজার করে স্ত্রীর আগে একটি সন্তান হয়েছে। এ বার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল বলে চিকিৎসকরা শিলিগুড়ি নিয়ে যেতে বলে। বাধ্য হয়েই তাকে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাই।’’
ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চন্দ্র মিদ্যা অবশ্য বলেন, ‘‘ওই প্রসূতিকে শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা হয় বলে শুনেছি। তবে তাঁকে এলাকারই একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছিল। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে সেই খবর পেয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। একটি শিশুকন্যার জন্ম দিয়েছেন তিনি। দু’জনই সুস্থ রয়েছে।’’
উত্তরদিনাজপুরের গোয়ালপোখরে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার সব থেকে কম। গত দু’মাস আগের শেষ তথ্য হিসেবে গোয়ালপোখরের প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার ছিল ৪০ শতাংশের কম। সেখানেই এই ঘটনার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসক আয়েশা রানি বলেন, ‘‘কার গাফিলতিতে এই ঘটনা তা তদন্ত করে দেখার জন্য মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলা হয়েছে।’’