সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। টিকিট পেতে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে শাসক দলে। কেউ দিনভর ঘুরছেন। খাটছেন। কিন্তু কেউ কেউ আবার টিকিট না পেলে ‘অন্য কথা’ ভাবতে হবে বলে বার্তাও দিয়েছেন।
এই অবস্থায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিজেপি। কোচবিহার জেলার দিনহাটা, শীতলখুচি সহ বেশ কিছু এলাকায় এমন অবস্থা টের পেয়ে নজর রাখতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক উদয়ন গুহ একাধিক সভায় হুমকির সুরে জানিয়েছেন, টিকিট না পেয়ে কেউ ‘অন্য-কথা’ ভাবলে পরিণাম ভাবলে হবে না।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “টিকিট পাওয়ার প্রতিযোগিতা থাকা ভাল। তার মধ্যে দিয়ে ভাল প্রার্থী উঠে আসবে। তবে টিকিট দেবে দল। আর সবাইকে তা মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে।’’ তাঁর কথায়, এতদিন সবাই তা করে আসছে। এ বারেই তা করবে। উদয়নবাবুর কথায়, “টিকিট না পেয়ে দলবিরোধী কাজ করা যাবে না। সে কথা আমরা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছে। যিনি এমনটা করবেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “পঞ্চায়েতে দলের টিকিট না পেলে অনেকেই বিজেপিতে ঝুঁকতে পারেন, সে আশঙ্কা অনেকেই করছেন। তাই প্রত্যেকের সঙ্গে এ বারে সেভাবেই বৈঠক শুরু করেছেন নেতৃত্ব।”
গত লোকসভা উপনির্বাচনে কোচবিহারে দ্বিতীয় হওয়ার পরে অনেকটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে বিজেপি। বামেদের একটি বড় অংশ বিজেপিতে যোগ দেয়। দিনহাটার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অশোক মণ্ডল থেকে শুরু করে ফুলবাড়ির এক প্রাক্তন তৃণমূল নেতাও বিজেপিতে যোগ দেয়। বিশেষ করে সীমান্ত লাগোয়া এলাকা মেখলিগঞ্জ, দিনহাটা ও শীতলখুচির মতো এলাকায় বিজেপির সংগঠন বেড়েছে। শুধু তাই নয়, শহর লাগোয়া পুণ্ডিবাড়ি থেকে শুরু করে কোচবিহার সদর মহকুমা এলাকায় অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপির কর্মীদের মাঠে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। দলীয় সূত্রের খবর, তলে তলে বিজেপির নেতা-কর্মীরা তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করেছেন। পুরনো কর্মী যাঁরা তৃণমূলে এখন গুরুত্ব পাচ্ছেন না, তাঁদের ‘টার্গেট’ করা হচ্ছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “তৃণমূলের অনেকেই যোগাযোগ রাখছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনে এলেই সব সামনে আসবে।”