ফরাক্কা সেতু মেরামতের জেরে যানজট। —ফাইল চিত্র
কোথাও অর্ধ সমাপ্ত হয়ে রয়েছে রাস্তা। কোথাও আবার সেতু তৈরির কাজ চলছে ধীর গতিতে। ফরাক্কা সেতু সংস্কারের জেরে ভারী যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মালদহ জেলা জুড়ে আমদানি কমেছে পাথর, বালির মতো নির্মাণ সামগ্রীর। আমদানি কমতেই দামও বেড়ে গিয়েছে। যার জেরে সরকারি ও বেসরকারি প্রকল্প গুলিরও কাজ থমকে গিয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন জেলাবাসী।
মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে গঙ্গা নদী। ফরাক্কা সেতু ২২৪০ মিটার লম্বা। ১৯৭৫ সালে ফরাক্কা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছিল। উত্তরবঙ্গ তো বটেই গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার এই ফরাক্কা সেতুই। ফরাক্কা সেতুটি দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কার না হওয়ায় একাধিক জায়গা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। গত, নভেম্বর থেকে সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হয়। এর জন্য পণ্যবাহী যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এমনকি, ভারী পণ্যবাহী গাড়ি কার্যত চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ফরাক্কা সেতু লাগোয়া মালদহ জেলার উন্নয়নের উপরে।
ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম থেকে বালি এবং ঝাড়খণ্ডের পাকুর থেকে পাথর, পাথরের গুঁড়ো আসে। মাস দু’য়েক আগেও এক লরি বালির দাম ছিল ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। এক লরি পাথরের দাম ছিল ২০ হাজার টাকা। এখন সেই দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লরি বালি ৬০ হাজার। পাথরের দাম হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা।
জেলায় দৈনিক গড়ে এক হাজার ট্রাক বালি ও পাথরের চাহিদা রয়েছে। ইংরেজবাজারের পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, “শহর জুড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ম্যাস্টিক এবং পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে কংক্রিটের রাস্তার কাজ চলছে। দু’টি কাজই অর্ধেক হয়েছে। তবে এখন নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় কাজের গতি কমে গিয়েছে। ঠিকাদারেরা কাজ করতে চাইছেন না। ফলে অর্ধ সমাপ্ত রাস্তায় সমস্যায় সাধারণ মানুষই।”
পুরসভার রাস্তার মতো সমস্যা তৈরি হয়েছে মালদহ বিমান বন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়নেও। সেখানেও প্রায় ১৮ কোটি টাকা প্রকল্পের কাজ চলছে। বিমান বন্দরের কাজের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থার সুপার ভাইজার মুকসেদুর হক বলেন, “বালি, পাথরের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্প খরচ বেড়ে গিয়েছে। দ্বিগুন দামে নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় করতে হচ্ছে।” মালদহের মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাসের সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু বলেন, “সেতু দ্রুত সংস্কার না হলে অন্যান্য জিনিসেরও দাম বাড়বে।”