উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পরে অনিল ভুঁইমালি। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য শিক্ষা দফতরের নির্দেশে সরকারিভাবে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক অনিল ভুঁইমালি। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ তিনি রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ওই দায়িত্ব নেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্য শিক্ষা দফতর রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গবেষণার গাইড অনিল বাবুকে উপাচার্য পদে নিয়োগ কে ঘিরে সম্প্রতি বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এই নিয়োগ কে ‘গুরুদক্ষিণা’ বলেও কটাক্ষ করেন বিরোধীরা।
এদিন উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর অনিলবাবু বলেন, ‘‘রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি কাউন্সিল গঠনের জন্য খুব শীঘ্রই তাঁর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কলকাতায় শিক্ষা দফতরে যাবে।’’ তাঁর দাবি, কাউন্সিল গঠন করে আগামী জুলাই মাস থেকেই স্নাতকোত্তর স্তরে পঠনপাঠন শুরু হয়ে যাবে। উপাচার্য জানান, সরকারি আবাসন না পাওয়া পর্যন্ত তিনি আপাতত রায়গঞ্জের সার্কিট হাউসে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখবেন।
২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চালু করার কথা ঘোষণা করেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কলেজের পরিকাঠামো ভাল থাকায় ও যেহেতু কলেজের পঠনপাঠন সহ প্রশাসনিক কাজকর্ম উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে, সেই কারণে পরবর্তীতে ওই কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সেইমতো গত বছরের ১১ নভেম্বর রাজ্য বিধানসভায় শাসক ও বিরোধী দলের বিধায়কদের সর্বসম্মতিক্রমে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার বিল পাশ হয়। এর পর গত ২১ জানুয়ারি রাজ্যপাল ওই বিলে সাক্ষর করার পর ৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা দফতর রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজটিকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেয়।
এদিন বিকালে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের তরফে সার্কিট হাউসে গিয়ে অনিলবাবুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মৎস্য বিষয়ক পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য বলেন, ‘‘পিছিয়ে পড়া জেলার সাধারণ ও গরিব পড়ুয়াদের উন্নত পঠনপাঠনের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী রায়গঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় চালু করে কথা রাখলেন। দলের তরফে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে এদিনই চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি নব্যেন্দু গুহ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অজয় সরকার জানান, রায়গঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় চালু হওয়ায় জেলার পড়ুয়ারা জেলাতে থেকেই আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতকোত্তর স্তরে পঠনপাঠনের সুযোগ পাবেন।
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকার বলেন, ‘‘সুষ্ঠ শিক্ষার স্বার্থে উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পঠনপাঠন চালু হওয়া উচিত।’’