আদিবাসীদের তাণ্ডবে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে এই তথ্যই উঠে এসেছে রায়গঞ্জ পুরসভা ও রায়গঞ্জ থানার পুলিশের হাতে। তার মধ্যে চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস দাবি করেন, আদিবাসীদের তাণ্ডবে পুর বাসস্ট্যান্ডের ভবন ও বিদ্যুতের সংযোগের লাইনের বিভিন্ন সামগ্রী মিলিয়ে ১২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাঁরা সরকারি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছেন।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, পুর বাসস্ট্যান্ড চত্বরের ছোট ব্যবসায়ী ও শহরের বিভিন্ন গাড়ির ক্ষতি বাবদ আরও প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে।
ব্যবসায়ীদের দুটি সংগঠন পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স ও রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের শঙ্কর কুণ্ডু ও অতনুবন্ধু লাহিড়িও জেলাশাসকের কাছে ব্যবসায়ীদের সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। জেলাশাসক আয়েশা রানির বক্তব্য, সরকারি কোনও প্রকল্প থেকে ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
গত ৯ জুলাই রায়গঞ্জ করণদিঘির বাসিন্দা দুই আদিবাসী নাবালিকাকে একদল দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে খুনের হুমকি দিয়ে প্রথমে বাসস্ট্যান্ডের দোতলায় ও পরে বাসস্ট্যান্ডের বাইরের একটি পানশালার উপরে নিয়ে গিয়ে তাদের ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ওই দিনই বাসস্ট্যান্ড চত্বর থেকে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আগ্নেয়াস্ত্র সমেত একাধিক সমাজবিরোধী কার্যকলাপে অভিযুক্ত নবীন শীল, শুভম প্রসাদ ও উত্পল চাকি নামে রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গত ১৬ জুলাই রায়গঞ্জের উকিলপাড়া থেকে পান্না সরকার নামে এক গাড়ি চালককে গ্রেফতার করা হয়। পর দিন বিজয় দাস, চন্দন দত্ত ও জয়ন্ত দাস নামে বাসস্ট্যান্ডের বাইরের তিন হোটেল কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা শহর অশান্ত হয়ে ওঠায় অভিযুক্তদের হয়ে এখন আর কোনও আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেননি।
আদিবাসী সমাজশিক্ষণ সাংস্কৃতিক সংস্থার জ্যাঠা মুর্মুর দাবি, ‘‘পুলিশি তদন্ত করে ধর্ষণের ঘটনার আরও কেউ ফেরার থাকলে গ্রেফতার করুক। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।’’