প্রতীকী ছবি।
কাশ্মীর প্রসঙ্গে ফেসবুক পোস্টের পরে শিলিগুড়ির অরবিন্দপল্লিতে এক ছাত্রীর বাড়িতে হামলা হয় রবিবার রাতে। কিন্তু এ রকম ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যবস্থা নিতে বলার পরেও, ওই ছাত্রীর বাড়িতে হামলাকারীদের কেউই গ্রেফতার হননি। তাই এ দিনও এলাকায় ঢুকতে পারেনি ওই ছাত্রী ও তাঁর মা। এ দিন থেকেই তুলে নেওয়া হয়েছে ছাত্রীর বাড়ির পুলিশ পিকেট। ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘পুলিশ পিকেট তুললেও এলাকায় টহলদারি অনেক বাড়ানো হয়েছে, বাড়ি ফিরতে কোনও সমস্যা হলেই আমাদের জানাতে বলা হয়েছে ওই পরিবারকে। আর আমরা অভিযোগের তদন্ত ঠিক পথেই চালাচ্ছি।’’
গত রবিবার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দপল্লিতে ওই ছাত্রীর যুদ্ধবিরোধী একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে আলোড়ন শুরু হয়। পরে বেশ কিছু যুবক যুবতী ওই ছাত্রীর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, অসুস্থ কুকুরকে সারিয়ে তোলা, পথকুকুরদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালানো কিছু গোষ্ঠীর সঙ্গে ওই ছাত্রীর দাদা কাজ করতেন। কিন্তু পরে তাঁদের থেকে আলাদা হয়ে যান তিনি। তার জেরে গত এক বছরে সেই গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে ওই ছাত্রীর দাদা ও তাঁর বন্ধুদের সংগঠনের একটি ঠান্ডা লড়াই তৈরি হয়েছিল। তার জেরেই আক্রমণ হয়ে থাকতে পারে। ওই ছাত্রীর দাদা এ দিন বলেন, ‘‘একটি পোস্ট নিয়ে স্রেফ গলাবাজি করে, মিথ্যে বলে কিছু লোক বাড়িতে চড়াও হল, কিন্তু কেউ গ্রেফতার হল না। কী ভাবে মা-বোন বাড়িতে ফেরার ভরসা পাবে?’’
ঘটনার দিন থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত ওই ছাত্রীর বাড়িতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছিল। মঙ্গলবার থেকে তা তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে, ওই ছাত্রী ও তাঁর মা বাড়িতে ফিরতে চাইলে তাঁদের পুলিশ এসকর্ট দিয়ে বাড়ি পৌঁছানো হবে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারছে না ওই পরিবার। এ দিন ওই ছাত্রীর ফোনে জানিয়েছে, আরও কিছু দিন নিরাপত্তা রাখা হোক তাঁদের পরিবারে। একই সঙ্গে অভিযুক্তরা যেরকম ভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে গিয়েছে, তাতে বিনা নিরাপত্তায় বাড়ি ফিরলে আবার যে আক্রমণ হবে না সেই নিশ্চয়তা কোথায়?
ওই ছাত্রীর মা মূল ৮ জন সহ অনেকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সোমবারই। কিন্তু ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ দেবলিনার বাড়িতে হামলাকারী কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। যদিও সমস্ত ভিডিও ফুটেজ এবং হামলাকারীদের বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল রয়েছে বলে দাবি ওই ছাত্রীর পরিবারের। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা বলেন, ‘‘দুই তরফেই যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ দুটোই তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিক।’’