ব্যাঙ্ক, এটিএমের লাইনে ফিরল নোট-বাতিলের স্মৃতি

এ দিন সকাল ১০টায় বাজারের থলি হাতে ইংরেজবাজার শহরের বালুচরের একটি এটিএমে পৌঁছন হাবিবা খাতুন। তিনি জানান, সেটির ঝাঁপ খোলা থাকলেও ছিল না টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:১৩
Share:

অপেক্ষা: এটিএমের সামনে গ্রাহকের লাইন। সোমবার ইংরেজবাজারে। নিজস্ব চিত্র

সরস্বতী পুজোর পরের তিন দিনও বন্ধ ছিল ব্যাঙ্ক। তাতে টাকা শেষ হয় এটিএমেও। মাসের শুরুর দু’দিনও এমন পরিস্থিতিতে দুর্ভোগে পড়েন আম-জনতা। সোমবার সকালে ব্যাঙ্কের দরজা খুলতেই তা-ই জমল ভিড়। শহর জুড়ে বিভিন্ন এটিএমের সামনেও পড়ল লম্বা লাইন। অনেকে বললেন— ‘‘এ যেন কয়েক বছর আগের নোটবাতিলের পরের ছবি।’’

Advertisement

এ দিন সকাল ১০টায় বাজারের থলি হাতে ইংরেজবাজার শহরের বালুচরের একটি এটিএমে পৌঁছন হাবিবা খাতুন। তিনি জানান, সেটির ঝাঁপ খোলা থাকলেও ছিল না টাকা। তাই যেতে হয় মালদহ প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের একটি কাউন্টারে। লম্বা লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে শেষে মেলে টাকা। হাবিবা বলেন, ‘‘পরপর চার দিন বন্ধ ছিল ব্যাঙ্ক। এটিএমের ঝাঁপ খোলা থাকলেও মেলেনি টাকা। মাসের শুরুতেই এমন কাণ্ডে হাত ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল।’’

এটিএমের লাইনে দাঁড়িয়ে এ দিন ক্ষোভ উগড়ে দিলেন সঞ্চিতা সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘নোট-বাতিলের দিনগুলো যেন ফিরে এসেছে। অ্যাকাউন্টে টাকা রয়েছে, কিন্তু তুলতে পারছিলাম না। মাসের বাজার, ওষুধ কিছু কেনা যায়নি। টাকা পেলে এ বার দোকানে যেতে হবে।’’ কয়েকটি দাবিতে গত শুক্রবার থেকে দু’দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ‘অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’। বৃহস্পতিবার ছিল সরস্বতী পুজোর ছুটি। রবিবারও ছুটির দিন। পরপর চার দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়ে এটিএমেও। শহরবাসীর একাংশের বক্তব্য, বিশেষ করে মাসের শেষ এবং মাস পয়লায় ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

Advertisement

আধার কার্ড সংশোধনেও হয় বিপাক। আবেদনকারী অনেকের বক্তব্য, ‘‘অনেক আগে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মিলেছিল আধার সংশোধনের তারিখ। দু’দিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘটে সব গরমিল হয়ে গেল।’’ স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকালে ব্যাঙ্ক খুলতেই উপচে পড়ে ভিড়। আধার কার্ড সংশোধনেও আসেন অনেকে। কেউ কেউ সকালেই হাজির হন ব্যাঙ্কে। রাষ্ট্রায়ত্ব একটি ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘চার দিনের কাজ এক দিনে পড়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে আধার সংশোধনও করতে হচ্ছে।’’ যদিও গ্রাহকদের স্বার্থেই ওই ধর্মঘট করা বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘গ্রাহকদের সুবিধা দিতেই ব্যাঙ্ক আধার কার্ড সংশোধনের কাজ করছে।’’

ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহে মোট ২৬১টি ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে। এটিএম কাউন্টার রয়েছে শ’পাঁচেক। গ্রাহকদের একাংশের নালিশ, এ দিন ৬০ শতাংশ এটিএমে টাকা নেই।

মালদহের লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সুশান্তকুমার হালদার বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের মধ্যে সব এটিএমের পরিষেবা স্বাভাবিক হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন